নির্যাতনের শিকার শিশুর দায়িত্ব নিলেন মানবিক পুলিশ সুপার
নওগাঁর মহাদেবপুরে মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে হাত-পা বেঁধে শিহাব হোসেন নামে ১১ বছর বয়সী এক শিশুকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) দুপুরে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়ক সংলগ্ন বাগাচারা এলাকায় নির্মাণাধীন একটি অটো গ্যাস ফিলিং স্টেশনের সাইট অফিসে এ ঘটনা ঘটে।
শিহাব হোসেন একই উপজেলার বাগাচারা গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে। সে নওগাঁ সদর হাপানিয়া হাই স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।
মারধরের ঘটনার পর চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে মহাদেবপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। দ্রুত তার চিকিৎসা করাতে না পারলে তার শরীরের বড় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে বলে জানান চিকিৎসক।
চিকিৎসকের কথা শুনে দিশেহারা হয়ে পড়েন শিহাবের বাবা টমটমচালক খোরশেদ আলম। বিষয়টি জানতে শুক্রবার রাতে পেরে নওগাঁ জেলার পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া তার সঙ্গে কথা বলেন এবং ছেলের চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। শিশুটির চিকিৎসা ও ওষুধের সব খরচ বহন করবেন তিনি।
শিহাবের বাবা খোরশেদ আলম বলেন, শিহাবের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। টমটম চালিয়ে সংসার চালাতেই হিমশিম খাচ্ছি। এরইমধ্যে অনেক ঋণ করে ফেলেছি। সন্তানের চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে না পেরে চিন্তিত ছিলাম। পুলিশ সুপার চিকিৎসার সব খরচ বহনের আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি পাশে না দাঁড়ালে ছেলেটার অনেক বড় ক্ষতি হতো।
পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, খোরশেদ আলম অর্থের অভাবে সন্তানের চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না। শিশু শিহাবকে সুস্থ করে তার বাবার মুখে হাসি ফোটাতে পারলেই আমি সার্থক হব।
এদিকে মারধরের ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় মূল অভিযুক্ত বকুল হোসেন (৫৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। তিনি ওই অটো গ্যাস ফিলিং স্টেশনের নৈশপ্রহরী। তার বাড়ি উপজেলার চৌমাশিয়া গ্রামে। থানা পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি নির্যাতনের কথা স্বীকার করেছেন। তাকে হাজতে রাখা হয়েছে। শনিবার সকালে অভিযুক্ত বকুল হোসেনকে আদালতে নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, পুলিশ সুপার আবদুল মান্নান মিয়া সম্প্রতি এক বৃদ্ধাকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন। এছাড়াও অসহায় তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করেছেন। নগদ অর্থ সাহায্য করেছেন এক বয়স্ক রিকশাচালককে। কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া বাবাহারা শিশু মরিয়মের পাশেও দাঁড়িয়েছেন মানবিক এ পুলিশ সুপার।
শামীনূর রহমান/আরএইচ