অবশেষে ২৮ ঘণ্টা পর দাফন হলো সেই বৃদ্ধের
দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় সৃষ্টি হওয়া সেই বৃদ্ধ বাবা মো. ইয়াছিন মোল্লা (৮৫) লাশ ২৮ ঘণ্টা পর দাফন করেছেন তার পরিবারের সদস্যরা। বুধবার (৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টার দিকে পরিবারের সদস্যেদের সমঝোতায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও বৃদ্ধের আত্মীয়স্বজনের উপস্থিতিতে তাকে দাফন করা হয়।
মঙ্গলবার (৬ জুলাই) বিকেল ৩টায় মৃত্যুবরণ করেন ইয়াছিন মোল্লা। কিন্তু বুধবার (৭ জুলাই) দুপুর ১টা পর্যন্ত বাড়ির উঠানেই পড়ে থাকে তার মরদেহ। কারণ, এ সময় জমিজমা ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন মৃতের সন্তানেরা।
জানা গেছে, মৃত ইয়াছিন মোল্লার পাঁচ সন্তান হলেন বাবলু মোল্লা, ফুলবড়ু, রাবেয়া ও মমতাজ ও রহমান মোল্লা। জমিজমা নিয়ে চারজনের সঙ্গে ছোট ছেলে রহমান মোল্লার সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। হঠাৎ তাদের বাবা অসুস্থ হয়ে মারা যান। কিন্তু বিরোধের জের থাকায় উঠানে বাবার লাশ রেখে জমি ভাগাভাগি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন তারা। ততক্ষণে অতিবাহিত হয়ে যায় ২২ ঘণ্টা।
এরপর স্থানীয়রা খবর দিলে দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাফিজুল ইসলাম ও গোয়ালন্দঘাট থানা পুলিশ এলে সালিসের মাধ্যমে বিষয়টি সুরহা করলে দাফনের সিদ্ধান্ত নেন তার সন্তানরা। তবে পুলিশ ময়না তদন্তের জন্য নিয়ে যায় ইয়াছিন মোল্লার মরদেহ। ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যার দিকে পরিবারের কাছে মরদেহ বুঝিয়ে দেয় গোয়ালন্দ ঘাট থানা পুলিশ।
দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৯ নং সদস্য আবদুস সালাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি খুব দুঃখজনক ছিল। পরবর্তীতে পরিবারের লোকজন তাদের ভুল বুঝতে পারে। বৃদ্ধের পাঁচ সন্তান ও পরিবারের অন্য সদস্যরা একত্র হয়ে বৃদ্ধকে দাফন করে।
দেবগ্রাম ইউপির চেয়ারম্যান মো. হাফিজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার সন্ধ্যার দিকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ২২ ঘণ্টা পর লাশ দাফন করা হয়। তিনি আরও বলেন, এমন মর্মান্তিক দৃশ্য আমি এর আগে কখনো দেখিনি। স্থানীয়দের মাধ্যমে বিষয়টি জানার পর আমি দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে গোয়ালন্দঘাট থানা পুলিশকে খবর দিই। এরপর আমি এবং পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতিতে সালিসের মাধ্যমে বিষয়টি সুরহা করে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করি।
তবে এ ব্যাপারে বৃদ্ধার ছেলেদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তারা এই বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
মীর সামসুজ্জামান/এনএ