লকডাউনে কাজ বন্ধ, সন্তানদের খাবার দিতে না পেরে বাবার আত্মহত্যা
অভাবের কারণে পরিবারে কলহ চলে আসছিল। লকডাউনে কাজ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে পারিবারিক কলহ আরও বেড়ে যায়। সেই কলহের জের ধরেই মুন্সিগঞ্জ সদরে দ্বীন ইসলাম (২৫) নামে এক দিনমজুর ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। রোববার (৪ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে সদর উপজেলার পশ্চিম মুক্তারপুর এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
দ্বীন ইসলাম বরিশাল জেলার কাউনিয়া এলাকার গৌতমের ছেলে। তিনি মা, স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে নিয়ে মুক্তারপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অভাবের কারণে আগে থেকেই কলহ ছিল পরিবারে। করোনার কারণে কাজ না থাকায় সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিলেন দ্বীন ইসলাম। এ নিয়ে স্ত্রী শাহিদা বেগমের সঙ্গে তার কলহ আরও বেড়ে যায়। রোববার সকালে ফের স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হয়। এ সময় স্ত্রীকে ঘর থেকে বের করে দেন দ্বীন ইসলাম। পরে দরজা বন্ধ করে ঘরের আড়ার সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি।
নিহতের মা জুলেখা বেগম বলেন, লকডাউনের কারণে কাজ ছিল না দ্বীন ইসলামের। ছেলে-মেয়ে খাবার চাইত। এ নিয়ে সংসারে সমস্যা। কাজ নেই, পুলাপাইনের মুখে ভাত দিতে পারে না, তাই অভিমানে মরে গেছে।
নিহতের স্ত্রী শাহিদা বেগম বলেন, লকডাউনে কাজ ছিল না। ঘরে বাজার-সদাই কিছুই নেই। পুলাপাইনরে খাওয়াইতে পারছিলাম না। সংসারে অভাব দেইখা মনে করছে পুলাপাইনরে খাওয়াইতে পারি না, বাইচা থাইকা কী করুম। উনি তো মইরা গেছে, আমি কি করুম? লকডাউন খুললে কাজ করে আমাদের খাওয়াইতে পারত। আমি তো তাও পারুম না।
এ ব্যাপারে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মুন্সিগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। কি কারণে আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি আমার জানা নেই।
ব.ম শামীম/এসপি