ভারতের কাছে দুই কোটি ভ্যাকসিন পাওনা আছে : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ১১ কোটি ভ্যাকসিন আমাদের হাতে আসতে পারে। এই ভ্যাকসিন পেলে দেশের সাড়ে ৫ কোটি মানুষকে আমারা ভ্যকসিন দিতে পারব। ভ্যাকসিনের মাধ্যমেই করোনা নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে জনসন অ্যান্ড জনসনের ৭ কোটি ভ্যাকসিন পেলে আমাদের ৮০ শতাংশ কাভার হয়ে যাবে।
শনিবার (২৬ জুন) বিকেল সোয়া ৩টার দিকে মানিকগঞ্জের গড়পাড়ায় নিজ বাসভবনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা লকডাউন চাই না। কারণ লকডাউনে মানুষের ক্ষতি হয়, দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হয়। কাজেই এটা আমাদের কাম্য নয়। কিন্তু মানুষের জীবন রক্ষার্থে এবং করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের এই লকডাউন দিতে হচ্ছে।
দেশে ভ্যাকসিন তৈরির বিষয়ে তিনি বলেন, ভ্যাকসিন তৈরির বিষয়ে প্রাধনমন্ত্রী খুবই আগ্রহী। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি মিটিং করা হয়েছে। ভ্যাকসিন তৈরির জন্য প্রজেক্ট প্ল্যান তৈরি করতে বলা হয়েছে। গোপালগঞ্জে আমাদের যে ওষুধ তৈরির কারখানা রয়েছে সেখানে করোনা ভ্যাকসিন তৈরির ব্যবস্থা করেছি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, ভারতের সঙ্গে তিন কোটি ভ্যাকসিনের চুক্তি করেছিলাম, পেয়েছি মাত্র ৭০ লাখ। আর উপহার হিসেবে দিয়েছিল ৩০ লাখ। ভারতের কাছে এখন দুই কোটি ভ্যাকসিন পাওনা আছে। চীনের সঙ্গে আমাদের দেড় কোটি ভ্যাকসিনের চুক্তি হয়েছে এবং কোভ্যাক্স ফেসিলিটি যে আছে সেখানে ৬ কোটি ৮০ লাখ ভ্যাকসিনের বুকিং দেওয়া আছে। যেটা ডিসেম্বরের মধ্যে দেওয়ার কথা।
তিনি আরও বলেন, সারাদেশে কঠোর লকডাউন দেওয়া হচ্ছে। কারণ আপনারা জানেন কয়েকদিন ধরে দেশে মৃত্যুর হার অনেক বেড়ে গেছে। গতকালও ১০৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। সংক্রমণের হারও প্রায় ২২ শতাংশের কাছে চলে গেছে। দেশের প্রায় প্রত্যেকটি জেলায় করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষ করে রাজশাহী ও খুলনায় করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু বেশি হচ্ছে। পাশাপাশি বিভাগ, জেলা এবং ঢাকা শহরেও সংক্রমণ বাড়ছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, লকডাউনের ওপর আমরা নির্ভরশীল নয়, লকডাউন দিতে হয় বাধ্য হয়ে। এই সংক্রমণকে রোধ করার জন্য একমাত্র পন্থা হলো লকডাউন, যদি আপনার হাতে ভ্যাকসিন না থাকে। বিশ্বের সকল দেশই লকডাউন দিয়েই করোনাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে।
তিনি বলেন, রাজধানীতে করোনা সংক্রমণের হার প্রায় ১৩ শতাংশ হয়ে গেছে। আমাদের পরিসংখ্যান অনুযায়ী হাসপাতালে প্রায় ৫ হাজার করোনা রোগী আছে। যখন করোনা নিয়ন্ত্রণে ছিল তখন এই সংখ্যা ছিল এক হাজার। করোনা সংক্রমণ এভাবে বাড়তে থাকলে আমারা হাতপাতালে রোগীদের জায়গা দিতে পারব না এবং চিকিৎসা দিতে আমাদের হিমশিম খেতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মাধ্যমে আমারা গতকালই কোভ্যাক্স থেকে ২৫ লাখ মডার্নার ভ্যাকসিন পেয়েছি। এই ভ্যাকসিনগুলো দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। আমরা আশা করছি আগামী আট থেকে দশদিনের মধ্যে চীনের ভ্যাকসিনও দেশে পৌঁছে যাবে। এই ভ্যাকসিনগুলো চলে আসলে ভ্যাকসিন কার্যক্রম আবারও ভালো মতো শুরু করতে পারবো এবং করোনা নিয়ন্ত্রণে অনেকটাই সফল হব।
সোহেল হোসেন/আরএআর