মিরপুর পৌরসভায় ৭ দিনের কঠোর বিধিনিষেধ
কুষ্টিয়ার মিরপুর পৌরসভা এলাকায় এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বুধবার (১৬ জুন) বিকেলে মিরপুর উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি ও নাগরিক কমিটির সভায় কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপের এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
মিরপুরের উপজেলা নির্বাহী অফিসার লিংকন বিশ্বাস বলেন, এক সপ্তাহের জন্য কুষ্টিয়া পৌরসভার মতো মিরপুর পৌরসভা এলাকায় কাঁচাবাজার ও ওষুধের দোকান ব্যতীত অন্য সব দোকান-পাট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একইসঙ্গে স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।
সভায় বলা হয়, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে করোনা সংক্রমণের আধিক্য বিবেচনায় পৌর এলাকায় জরুরি সেবা ব্যতীত সব দোকান, কাঁচাবাজার ও জনসমাবেশের স্থান ১৭ জুন ভোর ৬টা থেকে আগামী এক সপ্তাহ বন্ধ থাকবে।
এছাড়া অন্য উপজেলায় সন্ধ্যার পর দোকানপাট বন্ধ রাখা, হোটেলগুলোতে লোকসমাগম নিয়ন্ত্রণ এবং যত্রতত্র একাধিক লোকের উপস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা প্রশাসন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় ব্যবস্থা নেবে।
এ সময় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা আদায়, স্বাস্থ্যবিধি পালনে মনিটরিং জোরদার করা এবং প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বের না হতে প্রচার-প্রচারণা চলমান থাকবে।
সভায় বক্তারা জানান, সার্বিকভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য বিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। সন্ধ্যার পর একাধিক লোকের একত্রে সমাগম বন্ধ করতে হবে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং সর্বক্ষেত্রে মাস্ক ব্যবহার করার নির্দেশনা দেন তারা।
ইউএনও লিংকন বিশ্বাস বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে মানুষকে সচেতন করতে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা ও জনগণকে সচেতন করার কাজ চালিয়ে আসা হচ্ছিল। আপাতত মিরপুর পৌর এলাকায় এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়।
ইউএনও লিংকন বিশ্বাসের সভাপতিত্বে সভায় পৌরসভার মেয়র এনামুল হক মালিথা, মিরপুর উপজেলার নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক নজরুল করিম, মিরপুর বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মফিজুল হক সহ সরকারি বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তা, উপজেলা করোনাভাইরাস প্রতিরোধ কমিটি ও নাগরিক কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে কুষ্টিয়ায় ২৪ ঘণ্টায় ২৩৯ নমুনা পরীক্ষা করে ৯৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। একদিন আগেও (সোমবার) অতীতের রেকর্ড ভেঙে ৯১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। মঙ্গলবার (১৫ জুন) সেই রেকর্ড ভেঙে নতুন রেকর্ড হলো। এটিই এখন পর্যন্ত এক দিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত।
যা নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ৪২ দশমিক ০৬ শতাংশ। একই সময়ে তিনজন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এ পর্যন্ত জেলায় মোট ৫ হাজার ৮৩৪ জন করোনা শনাক্ত হয়। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিস।
নতুন ৯৮ জন করোনা আক্রান্তের মধ্যে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ৬৫ জন, দৌলতপুরের ৬ জন, কুমারখালীর ১২ জন, ভেড়ামারার ৬ জন, মিরপুরের ৮ জন ও খোকসার একজন রয়েছেন। নিহত তিনজনের দুজন সদর উপজেলার ও একজন কুমারখালীর বাসিন্দা।
রাজু আহমেদ/এমএসআর