ফোন করলেই নমুনা সংগ্রহকারী দল যাবে বাড়ি
`হটলাইনে ফোন করি, নমুনা সংগ্রহকারী যাবে আপনার বাড়ি' স্লোগান নিয়ে বাগেরহাটে করোনা পরীক্ষার জন্য ভ্রাম্যমাণ নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে বাগেরহাট জেলায় করোনা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় বাগেরহাট-২ (কচুয়া-সদর) আসনের সংসদ সদস্য শেখ তন্ময় এই উদ্যোগ নিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৫ জুন) সকাল ১০টায় বাগেরহাট সদর হাসপাতালের সামনে এই কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ আজিজুর রহমান।
ভ্রাম্যমাণ টিমের কাছে প্রথম নমুনা দেন শহরের বণিক পট্টি এলাকার লিটন সরকার। তিনি বলেন, চার দিন ধরে নানা উপসর্গ নিয়ে বাসায় আছি। হাসপাতালে যেতে পারছিলাম না। আজ হাসপাতাল থেকে এসে আমার নমুনা সংগ্রহ করে নিয়েছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন বাগেরহাটের সাধারণ সম্পাদক ডা. মোশারফ হোসেন বলেন, আমাদের বিভিন্ন উপজেলায় এই নমুনা সংগ্রহের বিষয়টি যদি অবহিত করতে পারি, তবে নমুনা সংগ্রহ করে রোগীর সঠিক অবস্থা বুঝতে পারব এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারব। এই উদ্যোগ করোনা সংক্রমণ রোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দীন বলেন, বাগেরহাটের মানুষের জন্য ‘হটলাইনে ফোন করি, নমুনা সংগ্রহকারী যাবে আপনার বাড়ি’ নতুন একটি স্বাস্থ্যসেবা চালু করেছেন সংসদ সদস্য। বাগেরহাট সদর, কচুয়া, মোংলা-রামপাল ও শরণখোলা-মোড়েলগঞ্জ এলাকায় তিনটি ভ্রাম্যমাণ নমুনা সংগ্রহকারী দল কাজ শুরু করেছে। এ উদ্যোগের কারণে মাননীয় সংসদ সদস্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
বাগেরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ভূইয়া হেমায়েত উদ্দীন বলেন, আমাদের সংগঠনের সব নেতার প্রতি নির্দেশনা দেওয়া রয়েছে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে সতর্ক থাকার। এই ভ্রাম্যমাণ টিম যেখানেই যাবে, আমাদের নেতা-কর্মীরা তাদের সর্বোচ্চ সহায়তা করবে।
বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, ভ্রাম্যমাণ তিনটি গাড়ি বাগেরহাট সদর, কচুয়া, রামপাল, মোংলা, মোরেলগঞ্জ ও শরণখোলা উপজেলায় ঘুরে ঘুরে নমুনা সংগ্রহ ও র্যাপিড অ্যান্টিজেনের মাধ্যমে পরীক্ষা করবে। প্রতিদিন ৩০০ মানুষকে পরীক্ষা করবে। এ ছাড়া প্রতিটি গাড়িতে হটলাইন নম্বর রয়েছে। এ নম্বরে ফোন দিলে রোগীর বাড়িতে পৌঁছে যাবে টিম। নমুনা সংগ্র্রহ করে পরীক্ষার রিপোর্ট তাকে জানিয়ে দেবে। হটলাইন নম্বরগুলো হচ্ছে ০১৯২০-৯২২২২৯ ও ০১৪০০-৩০৫৪০৫।
বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক বলেন, আইন দিয়ে সব কাজ সম্ভব নয়। তাই করোনাকালীন মানুষকে সচেতন করাটাই মুখ্য। আমাদের পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা সব সময় করোনা সংক্রমণ রোধে জনসাধারণকে সচেতন করে আসছে।
বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, করোনা সংক্রমণ বাড়ায় মানুষ হাসপাতালে উপসর্গ নিয়ে আসতে চায় না। এ কারণে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহের যে কাজ শুরু হয়েছে, তাতে আমি সংসদ সদস্যের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। পাশাপাশি সবার সহযোগিতা কামনা করছি।
এ সময় বাগেরহাটের পুলিশ সুপার কে এম আরিফুল হক, সিভিল সার্জন ডা. কে এম হুমায়ুন কবির, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ভুইয়া হেমায়েত উদ্দিন, বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মাদ মোছাব্বেরুল ইসলাম, ডা. মো. শাহ নেওয়াজ, বাগেরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মিরাজুল করিম, বাগেরহাট সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম আজিজুল ইসলামসহ চিকিকৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
তানজীম আহমেদ/এনএ