ইউপি নির্বাচনে আচরণবিধি ভঙ্গ করলে ব্যবস্থা
সাতক্ষীরার কলারোয়া, তালা ও পাটকেলঘাটা থানায় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের তারিখ দেওয়া হয়েছে ২১ জুন। লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে কীভাবে নির্বাচন হবে সেটি নির্বাচন কমিশন ভেবে দেখবে। জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নির্বাচনটি পরবর্তী সুবিধা মতো কোনো সময়ে নেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে।
লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে সাতক্ষীরার দুই উপজেলার ২১টি ইউনিয়নে ভোটগ্রহণের বিষয়ে ঢাকা পোস্টকে এসব কথা বলেন সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমান।
নির্বাচনী পরিবেশ কেমন হবে এমন প্রশ্নে পুলিশ সুপার বলেন, নির্বাচনী পরিবেশ হবে শান্তিপূর্ণ। নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে সব প্রার্থীদের। আচরণবিধি ভঙ্গ করলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, তালা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন হুমকি দিচ্ছেন। নৌকায় ভোট না দিলে তাকে কেন্দ্রে যেতে দেওয়া হবে না। হাত-পা ভেঙে দেওয়া হবে। মঙ্গলবার (০৮ জুন) তালা সদরের খানপুর নতুনবাজারে লাঙল প্রতীকে ভোট দিতে চাওয়ায় বিকাশ দাসকে মারপিট করা হয়েছে। সরদার জাকির হোসেন ইতোপূর্বে তালা থানার এসআই মনির হোসেনকেও মারপিট করেছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন ইউনিয়নে নৌকার প্রার্থীরা জনসাধারণকে প্রভাবিত করে হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এসব অভিযোগের বিষয়ে তালা সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সরদার জাকির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি কোথাও-কাউকে হুমকি দেইনি। সবাই তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবে। আমার বিরুদ্ধ অভিযোগ সঠিক নয়। আর খানপুর নতুন বাজারে বিকাশ দাসের সঙ্গে আমার এক কর্মীর হাতাহাতি হয়েছে। বিকাশ দাস মানসিক ভারসাম্যহীন। মাঝে মধ্যে গাছের ডালে উঠে বসে থাকে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যে কোনো প্রার্থীর ক্ষেত্রে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। যদি কেউ নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করেন, তবে নির্বাচন কমিশনের যে আইন রয়েছে সেই আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি কেউ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে হুমকি-ধমকি দিয়ে থাকেন, তবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্বাচন কমিশন ও থানায় আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দাখিল করতে অনুরোধ করছি। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়, সে যেই হোক আমরা তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
সাতক্ষীরা জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা নাজমুল কবির ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২১ জুন নির্বাচন করার লক্ষ্যে সার্বিক প্রস্তুতি চলছে। সাধারণ ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারবেন। ভোটারদের হুমকি-ধমকি দিলে প্রার্থী বা ভোটারদের লিখিত অভিযোগ দিতে অনুরোধ করছি। বিষয়টি তাৎক্ষণিক ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও পুলিশকে অবহিত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে গত ১১ এপ্রিল সাতক্ষীরাসহ ১৯ জেলার ৬৪ উপজেলায় প্রথম ধাপে ৩৭১ ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণ স্থগিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। পরবর্তীতে ৩ জুন নির্বাচন কমিশনের সভায় আগামী ২১ জুন স্থগিত হওয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে কমিশন। কমিশনের সিদ্ধান্ত মতে সাতক্ষীরায় চলছে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ১১টি ও কলারোয়া উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে নির্বাচনের লক্ষ্যে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে তালা ও কলারোয়া উপজেলার সংশ্লিষ্ট রিটানিং কর্মকর্তারা।
আকরামুল ইসলাম/আরএআর