নামেই লকডাউন, বাস্তবে সব খোলা
ঘড়ির দোকান থেকে জুতার দোকান সব খোলা। দুই একজন ছাড়া কারো মুখে মাস্ক নেই। সব ধরনের যানবাহন চলছে। কারো দোকানে হালখাতা চলছে। নামেই চলছে লকডাউন, বাস্তবে সব খোলা। এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি ঢাকা পোস্টের সঙ্গে তুলে ধরেন সাতক্ষীরার তালা সদরের ব্যবসায়ী খায়রুল বাসার বাবু।
তিনি বলেন, মানুষের মাঝে সচেতনতাবোধ নেই। খুশিমতো চলছে সবকিছু। কাগজেকলমে লকডাউন ঘোষণা করলে করোনা প্রতিরোধ হবে না বলে আমি মনে করি। মানুষের মাঝে সচেতনতাবোধ বাড়াতে হবে। গরিব মানুষ ঘরে বসে থাকলে তারা খাবে কি করে? যে গ্রাম বা ইউনিয়নে করোনার প্রকোপ সেখানে কঠোর লকডাউন দিতে হবে। গরিবদের খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের ঘোষিত সাত দিনের লকডাউনের রোববার (০৬ জুন) দ্বিতীয় দিনে সবকিছুই অনেকটা স্বাভাবিক। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, লকডাউন বাস্তবায়নে মাঠে রয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা।
সাতক্ষীরা শহর ঘুরে ইয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন, মানুষের মাঝে সচেতনতাবোধ নেই। অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক নেই। জনজীবন অনেকটা স্বাভাবিক নিয়মেই চলছে। প্রশাসনের কঠোর কোনো নজরদারি নেই। চায়ের দোকানগুলো সব খোলা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দোকানগুলো দুপুর ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। তবে বাস্তবতা ভিন্ন, সকল দোকান খোলা। শহরের মধ্যে ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত ভ্যানের চলাচল বেড়েছে। শুধু বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। কাপড়ের দোকানগুলো এক দরজা বন্ধ রেখে চলছে বেচাকেনা।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মো.মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, লকডাউনের দ্বিতীয় দিন চলছে। গণমানুষকে আরও সচেতন হতে হবে। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে অনেকেই বের হচ্ছেন। কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা পুলিশ। বেআইনিভাবে চলাফেরার জন্য মামলা, জরিমানা এবং গাড়ি জব্দ করা হচ্ছে।
সাতক্ষীরা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) তানজিল্লুর রহমান বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দোকানপাটগুলো দুপুর ১২টা পর্যন্ত খুলে রাখার কথা বলা হয়েছে। এর বাইরে কেউ খুললে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শুধু শহর নয় উপজেলাকেন্দ্রিক সকল দোকানপাট খোলা ও অধিকাংশ মানুষের মুখে মাস্ক নেই এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট পাঠাচ্ছি। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের করোনাবিষয়ক মুখপাত্র ডা. জয়ন্ত কুমার বলেন, সাতক্ষীরা মেডিকেলে করোনা পজিটিভ হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ২৭ জন, সদর হাসপাতালে ২৬ জন। এ ছাড়া মেডিকেলে করোনা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭০ জন। শনিবার (৫ জুন) রাতে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা পজিটিভ একজন মারা গেছেন।
আকরামুল ইসলাম/এসপি