পাওনা টাকা চাওয়ায় মুদি দোকানিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ
ঝিনাইদহে পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে মুদি দোকানিকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার সাগান্না ইউনিয়নের বাদপুকুরে এই ঘটনা ঘটে।
মৃত দোকানির নাম মোহাম্মদ। তিনি বাদপুকুর গ্রামের কেনু মিয়ার ছেলে।
বাপ্পী নামে এক প্রতিবেশী ঢাকা পোস্টকে বলেন, মোহাম্মদ আলীর মুদি দোকান থেকে বাকিতে পণ্য ক্রয় করেন একই গ্রামের আসাদুল ইসলাম। সকালে পার্শ্ববর্তী ত্রিমোহণি বাজারে যাওয়ার সময় আসাদুলের কাছে টাকা চান মোহাম্মদ আলী। সে সময় আসাদুল মোহাম্মদ আলীর ওপর চড়াও হলে দুজনের মাঝে হাতাহাতি শুরু হয়। এক পর্যায়ে আসাদুল ও তার পরিবারের লোকজন মোহাম্মদ আলীকে মারপিট করেন। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মোহাম্মদ আলী মারা যান। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত আসাদুল, তার পিতা আশকর আলীসহ তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
আরও পড়ুন
প্রতিবেশী মো. লিটন হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ৭/৮শ টাকা দোকান বাকির ঘটনায় মোহাম্মদ ভাইকে মারা হয়েছে। আমরা প্রথমে দেখতে পাই মোহাম্মদ ভাই মাটিতে পড়ে আছেন। কয়েকজন মিলে তার মাথায় পানি দিচ্ছেন। তিনি খুবই অসুস্থ, এমন অবস্থায় তাকে সবাই মিলে হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে হাসপাতালে যাওয়ার পথে তিনি মারা যান।
মো. রাজন মিয়া নামে আরেকজন ঢাকা পোস্টকে বলেন, মোহাম্মদ আলী মামা আসাদুলের কাছে বাকির টাকা পাবেন। তিনি দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছিলেন। সকালে বাজারে যাওয়ার সময় আসাদুলের সঙ্গে দেখা হলে তার কাছে পাওনা টাকা চান। না দিলে আসাদুলের মা-বাবার কাছে বিচার দেন। এতে আসাদুল ক্ষিপ্ত হয়ে মামাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন। এরপর ধান গোছানো পার্ট দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। পরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে পথের মধ্যে মারা যান।
বাদপুকুর গ্রামের ইউপি সদস্য আকবর আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আশকর আলী ও তার ছেলে আসাদুল দীর্ঘদিন ধরে আমাদের এই এলাকায় চাতালে কাজ করেন। তাদের পরিবারের সবাই আব্দুর রবের চাতালে কাজ করেন। এখন তারা এই গ্রামের ভোটার। আশকর আলীর ছেলে আসাদুল দীর্ঘদিন ধরে মোহাম্মদ আলীর দোকানে থেকে বাকি খায়। টাকা চাইলে আজকাল পরে বলে ঘুরাতে থাকে। আজ টাকা চাইতে আসলে উলটো তাকে মারধর করে। হাসপাতালে নেওয়ার সময় মোহাম্মদ মারা যায়। এলাকাবাসী মোহাম্মদ হত্যার বিচার চাই।
ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন ঢাকা পোস্টকে বলেন, পাওনা টাকা চাওয়াকে কেন্দ্র করে উভয়ের মধ্যে মারামারির ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। এই ঘটনায় আসাদুল, আশকর ও তার স্ত্রীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এলাকার বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।
আব্দুল্লাহ আল মামুন/এএমকে