তারেক রহমানের পক্ষে আয়োজিত মানববন্ধনে বিএনপির সাবেক নেতার হামলা

নোয়াখালীতে তারেক রহমানের পক্ষে মানববন্ধন চলাকালে বিএনপির সাবেক নেতা আবদুল্লাহ মিয়ার বিরুদ্ধে হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৭ জন আহত হন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে নোয়াখালীতে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার বাদী সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট ওমর ফারুক ও তার ভাই চরজব্বর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ মিয়ার বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে চরজব্বর ইউনিয়নের সাধারণ জনগণ। মানববন্ধন চলাকালে হঠাৎ আবদুল্লাহ মিয়ার লোকজন হামলা চালায়। এ সময় চরজব্বর ইউনিয়নের ৭ ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. কামাল, যুবদলের কর্মী জাকেরসহ ৭ জন আহত হন। আহতদের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
চরজব্বর ইউনিয়নের ৭ ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মো. কামাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, তারেক রহমানের পক্ষে মানববন্ধন করায় আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। আওয়ামী লীগ সভাপতি ওমর ফারুক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা করেছে। সেই মামলার প্রতিবাদ করায় আমাদের প্রায় ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়। আমরা গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগের কাছে নির্যাতিত হয়েছি। বর্তমানে বিএনপির কাছ থেকে নির্যাতিত হচ্ছি। আমাদের পরিবার আমাদের বলে আমরা কিসের দল করি। যে দলে আগেও নির্যাতিত হয়েছি, এখনো হচ্ছি। আমরা এই বিচার তারেক রহমানের কাছে চাই।
মো. জাকের নামে এক কর্মী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আবদুল্লাহ মিয়া সাবেক বিএনপির সভাপতি। তার ভাই ওমর ফারুক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তারা দুইজন লুটেপুটে খাচ্ছে। বর্তমানে আমাদের এলাকায় সকল ফ্যাসিস্টকে পুনর্বাসন করতেসে। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলায় আমরা নির্যাতিত হচ্ছি। আমাদের জায়গা জমি, গরু মহিষ চুরি হচ্ছে। আমরা তাদের কঠোর শাস্তি চাই।
মো. ইকবাল নামে আরেক কর্মী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ওমর ফারুক তারেক রহমানসহ আমাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। আমরা সেই মামলা লড়তে লড়তে গত ১৭ বছর ঠিকমতো বাড়িঘরে ঘুমাতে পারি নাই। আজ বিএনপি নেতা আবদুল্লাহ মিয়ার অত্যাচারে আমরা বাড়িতে ঘুমাতে পারছি না। আমাদের জায়গা জমি দখল, গরু মহিষ চুরি করছে। তার প্রতিবাদ করতে গেলে আমাদের ওপর হামলা করছে। আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। এমন বিএনপির লোকের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে চরজব্বর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল্লাহ মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, কে বা কারা হামলা করেছে আমার জানা নেই। আমি কিছু দিন আগে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমাদের এলাকার সন্তান নাসির উদ্দীনকে ফুল দেওয়ায় আমার বিপক্ষে লোকজন লেগেছে।
সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। পুলিশ এবং সেনাবাহিনী পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। হামলায় কয়েকজন আহত হয়েছেন। তবে কেউ অভিযোগ করেনি। যদি অভিযোগ করে তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে নোয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহবুব আলমগীর আলো ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি গতকাল ঢাকায় এসেছি। হামলার খবর এখনো আমি পাইনি। তবে যদি বিএনপির কেউ এই হামলায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় তাহলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হাসিব আল আমিন/আরএআর