অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ায় জরিমানা, সড়ক অবরোধ করে শ্রমিকদের ধর্মঘট

ঈদের অষ্টম দিনেও নোয়াখালীর সোনাপুরে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ায় একুশে পরিবহনকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে ধর্মঘট পালন করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ৫৫ মিনিটে একুশ পরিবহনের কন্ট্রোল কাউন্টারে অভিযান পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেজান আহমেদ।
জানা যায়, ঈদুল ফিতরকে পুঁজি করে বাসের টিকিট কিনতে নোয়াখালী থেকে ঢাকা রুটে চলাচলকারী পরিবহনগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছে— এমন অভিযোগ পান জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ। তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেজান আহমেদ অভিযান পরিচালনা করলে সত্যতা পান এবং তাৎক্ষণিক ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এ সময় কাউন্টারের ম্যানেজার মো. মামুনকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তুলে নেওয়ায় পরিবহন শ্রমিকরা তাৎক্ষণিক বাস দিয়ে ব্যারিকেড দিয়ে চলাচল বন্ধ করে দেন।
মো. সুমন নামে এক যাত্রী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ধর্মঘটের কারণে ৫টা থেকে ৬টা পর্যন্ত কোনো বাস চলেনি। তাই আমরা সবাই বাস কাউন্টারের সামনে অপেক্ষায় ছিলাম। আমাদের ঢাকায় যাওয়া জরুরি ছিল, কিন্তু যেতে পারিনি।
একুশে পরিবহনের ডিরেক্টর ইকবাল মাহমুদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের ম্যানেজার মামুনকে এক বছরের জেল দেওয়া হয়েছে- এমন কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ায় শ্রমিকরা ধর্মঘট ডেকেছেন। তারপর প্রশাসন আশ্বাস দেওয়ায় শ্রমিকরা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেন। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। তবে এক ঘণ্টা কোনো যান চলাচল করেনি। সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ ছিল।
সুধারাম মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ম্যাজিস্ট্রেট ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে জরিমানা করায় একুশে পরিবহনের শ্রমিক সংগঠন রাস্তা বন্ধ করে দেয়। তাৎক্ষণিক সংবাদ পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে যাই। তারপর আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজিত শ্রমিকদেরকে সান্ত্বনা দিই। তারপর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সেজান আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছি। কিন্তু জেল দেওয়া যায় তা উল্লেখ করেছি। তারা ভুল বুঝে ধর্মঘট করেছে। ম্যানেজার আমার হেফাজতে ছিল। যখন পরিবহন মালিকরা অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় তারপর সে ম্যানেজারকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজকে পৃথক তিনটি অভিযানে মোট ৬৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযান অব্যাহত রয়েছে। সাধারণ মানুষের কাছ থেকে আর যেন ভাড়া বেশি না নেওয়া হয় সে বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে। যদি আমরা অভিযোগ পাই তাহলে আবার অভিযান পরিচালনা করব।
হাসিব আল আমিন/আরএআর