মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছে

মানুষ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছে বলে মন্তব্য করছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হারুনুর রশিদ। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) বিকেলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের বকুলতলায় মহারাজপুর ইউনিয়ন যুবদল আয়োজিত কর্মী সভায় তিনি এ কথা বলেন।
হারুনুর রশিদ বলেন, বিএনপির জন্ম হয়েছে শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যর্থতার মধ্য দিয়ে। জিয়াউর রহমানের রাজনীতির জন্ম হয়েছে সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আমাদের লড়াই এখনো বন্ধ হয়নি। যতক্ষণ পর্যন্ত বাংলাদেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হবে, যতক্ষণ পর্যন্ত ভোটের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, আমরা ইদানিং লক্ষ্য করছি কতিপয় দল বা গোষ্ঠী দ্রুত সময়ের মধ্য দিয়ে যাতে নির্বাচিত সরকার গঠিত হয় সেটির প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। বিএনপির বিরুদ্ধে বিভিন্ন রকম কথা বলছে। আমি তাদের উদ্দেশে বলতে চাই, গত ১৫ বা ১৬ বছর বিএনপি যে ত্যাগ স্বীকার করেছে, সেই ত্যাগ স্বীকার যদি আজকে না করতো তাহলে আজকের ফায়সালা আল্লাহর জমিনে আসতো না। হাজার হাজার লাখ লাখ বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে মিথ্যা মামলা দিয়ে ঘর ছাড়া করা হয়েছে এবং হত্যা করা হয়েছে। তাই আজকে যারা এসব কথা বলে নির্বাচনকে বিলম্বিত করতে চাচ্ছেন, এগুলো কোনো উসিলা হতে পারে না। সুতরাং দেশকে গণতন্ত্রের পথে নিয়ে আসতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আহ্বান জানাবো আট মাস পার হয়েছে। আমরা নির্বাচনেরে রোড ম্যাপ এখনো পায়নি। মানুষ অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় রয়েছে, তারা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এছাড়া শেখ হাসিনার অধীনে যদি একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হতো তাহলেও বিএনপি বিপুল ভোটে বিজয় লাভ করতো।
জামায়াত ও আজাহারীর সমালোচনা করে হারুনুর রশিদ বলেন, আমার বাড়ির কান্টাতে (গলি) আজাহারী সাহেবকে নিয়ে তাফসির করে গেলেন। এটা কি তাফসির মাহফিল ছিল নাকি তাফসির মাহফিলের নাম করে জামায়াতের বিভাগীয় শোডাউন ছিল। ওই মিটিংয়ের প্রধান অতিথি, সভাপতি ও মঞ্চের অতিথিবৃন্দ জামায়াতের ব্যক্তিবর্গ ছাড়া অন্য কেউ ছিলো কি? আর এটা নিয়ে আমি যখন বললাম যে, এটা নিয়ে চাঁদাবাজি চলছে তখন বলল হারুন এখন আলেম বিদ্বেষী হয়ে গেছে। এখন আপনারা যদি সকাল বিকেল যদি ইসলামের ফতোয়া চেঞ্জ করেন, পরিবর্তন করেন। কোরআন হাদিসের ব্যাখা কিয়ামত পর্যন্ত অপরিবর্তিত থাকবে। কোরআন হাদিসের ব্যাখা পরিবর্তন হবে না, পরিবর্তনযোগ্য নয়, কেউ করতে পারবে না। ১৯৯৬ সালে যখন জামায়াতের সাথে ভোট করেছিলাম তখন জামায়াতের পোস্টারে ছবি দেওয়া ছিল হারাম। আপনার দেখবেন ১৯৯৬ আর ২০০১ সালে লতিফুর রহমানের পোস্টারে কোনো ছবি ছিল না। আর এখন মসজিদ, গোরস্থান, ঈদগাহসহ সকল জায়গায় জামায়াত ইসলামের প্রার্থীদের ছবিসহ পোস্টার লাগানো আছে। এটার ব্যাখা কী দিবেন। সকাল বিকেল কী ধর্মীয় ব্যাখা পরিবর্তন হবে?
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সতর্ক করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছর আমরা মহারাজপুর ইউনিয়নে একটা বসার আয়োজন করলে পুলিশের র্যাবের গাড়ির আসা শুরু করতো। অথচ আজকের প্রোগামে পুলিশ, র্যাব কিছু নাই। যারা এই কাজগুলো করেছে তারা আজকে নাই। তাই তাদের উদ্দেশে খুব সতর্কভাবে বলছি, দেখো গত ১৫ বছর তোমরা মানুষের ওপর অনেক অন্যায়, জুলুম, অত্যাচার করেছো। তার প্রেক্ষিতে তোমাদের ওপর যা জুলুম হওয়া দরকার ছিল তার এক আনাও হয় নাই। যদি চুলকানি ও উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করো, তাহলে তোমাদের নেতাদের কিন্তু জবাবদিহিতার আওতায় নিয়ে আসবো। কারণ তোমরা মানুষকে হত্যা করেছো, অধিকার কেড়ে নিয়েছো এবং বিনা ভোটে ক্ষমতায় থেকেছো। তাই নতুন করে কেউ যদি চুলকানি বা উসকানি দেওয়ার চেষ্টা করো তাহলে কোনো লোক কিন্তু বাড়িতে বসে থাকবে না।
সভায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান অনু, রাণিহাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাফেজ রহমত আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা সেচ্ছাসেবক দলের সদস্য মো. মেসবাহুল হক, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি মিম ফজলে আজিম, মহারাজপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাত্তারসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আশিক আলী/আরএআর