বিয়ের অনুষ্ঠানে মাংস কম দেওয়ায় সংঘর্ষ, আহত ২০

লালমনিরহাটে বিয়ের অনুষ্ঠানে মাংস কম দেওয়াকে ঘিরে সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
বুধবার (২ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাতে সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের কাজিচওড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, কাজিরচওড়া গ্রামের একরামুল খানের মেয়ে বিথী আক্তারের সঙ্গে একই এলাকার মনসুর আলীর ছেলে আল মামুনের বিয়ের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হয়। পূর্ব আলোচনা অনুযায়ী বুধবার বিকেলে বর মামুনকে কেনাকাটা করে দিয়ে বিয়ের আসরে আসার আমন্ত্রণ জানায় কনে পক্ষ। কেনাকাটায় বিলম্ব করায় বর যাত্রীর কনের বাড়িতে যেতেও কিছুটা বিলম্ব হয়। এ নিয়েও তাদের মধ্যে মনোমালিন্য ছিল। দুই লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে বর যাত্রীদের আপ্যায়ন করা হয়। সেখানে পরিবেশনে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় এবং মাংস কম দেওয়া নিয়ে তর্কবিতর্ক হয়। একপর্যায়ে কনের লোকজন ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যুতের আলো নিভিয়ে দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর শুরু করে। এতে অন্ধকারে দুই পক্ষের নারী-শিশুসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। এসময় বর পক্ষের গাড়িও আটক করে রাখে কনে পক্ষের লোকজন।
আরও পড়ুন
পরে স্থানীয়রা আহতদের রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে ৯ জন ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি চলে গেছেন। ঘটনার পর বর আল মামুন নিজের এক আত্মীয়ের বাড়িতে এবং কনে বিথী আক্তার পাশের এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের বিয়ে হলেও সংঘর্ষের কারণে সাক্ষাত হয়নি।
আহত বরের দুলাভাই সুজন ইসলাম বলেন, বর যাত্রী যাওয়ার কথা ছিল ৪০ জন আমরা গিয়েছিলাম ৩২ জন। এতগুলো মানুষের খাবার পরিবেশন করছিল মাত্র দুইজন লোক। তার ওপর প্লেটে বালু, বেসিনে পানি নেই। ভাত দিলেও তরকারির খবর নেই। এ নিয়ে একটু কথা কাটাকাটি হলে কনের চাচা বাড়ির ভেতর থেকে লাঠি এনে আলো নিভিয়ে এলোপাথাড়ি মারপিট শুরু করে। তাদের লাঠির আঘাতে উভয়পক্ষের লোকজন আহত হয়েছেন। বেশি আহত হয়েছেন বরপক্ষের লোকজন।
কনের চাচাত ভাই নয়ন খান বলেন, বরপক্ষের লোকজন বেশি এসেছিল। তাই খাবার সংকট ছিল। মাঝরাতে কোথাও পাওয়া যাবে না, তাই অল্প করে সবাইকে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এ নিয়ে বরপক্ষের একজন খারাপ মন্তব্য করায় মারামারি লাগে। এতে আমাদেরও ৫/৭ জন আহত হয়েছেন।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. সোয়াদ হোসেন বলেন, বিয়ের বাড়িতে সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় ২০ জন আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। কয়েকজন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি গেলেও ৯ জন ভর্তি রয়েছেন।
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) নুরনবী বলেন, বিয়ের অনুষ্ঠানে দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় কোনো পক্ষই অভিযোগ দায়ের করেননি। অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিয়াজ আহমেদ সিপন/এসএসএইচ