হলে-মেসে থাকা উপদেষ্টারা এখন ৫০ হাজার টাকার জুতা পরেন : বুলু

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্যে থেকে কয়েকজন উপদেষ্টা পদত্যাগ করেছেন। আবার কয়েকজন আছেন যারা ছাত্ররাজনীতি করেন। তারা হলে থাকতেন এবং মেসে থাকতেন। তারা এখন আগে পেছনে কয়েকশ গাড়িবহর নিয়ে চলাফেরা করেন। বিলাসবহুল জীবনযাপন করছেন। তারা জামা-জুতা-হাত ঘড়ি দামি দামি জিনিসপত্র ব্যবহার করেন।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) দুপুরে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে নিহত উপজেলার সাত শহীদ পরিবারের মাঝে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেওয়া ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় বেগমগঞ্জের জুলাই-আগস্টের শহীদ মো. ফারুক, মো. সজীব, ইফফাত হোসেন, আবদুল মোতালেব মোল্লা, মো. আশিক হোসেন, মো. বেলাল হোসেন ও মো. রুবেলের পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, কোটি কোটি টাকা খরচ করে ইন্টারকন্টিনেন্টালে ইফতার করেছেন এবং কোটি কোটি টাকা খরচ করে দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান করেছেন। তারা আগে পরতেন ৫০০ টাকার পাঞ্জাবি, এখন পরেন ৩০ হাজার টাকার পাঞ্জাবি। জুতা পরেন ৫০ হাজার টাকার। হাতের ঘড়ি ৪০ হাজার টাকা। হঠাৎ করে তাদের চেহারায় রশ্মি এসেছে। তারা প্রশাসনে তদবির করছেন। অমুক কে অমুক জায়গায় দিতে হবে। এর থেকে জাতি মুক্তি পেতে চায়।
জুলাই-আগস্ট আন্দোলন সংগ্রামে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সরাসরি নেতৃত্ব দিয়েছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, যেমন ১৯৯০ সালের গণঅভ্যুত্থানে বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। জুলাই-আগস্টে তারেক রহমানের ঐতিহাসিক ভূমিকার কারণে বাংলাদেশে ৫০টি দল নিয়ে যে জোট করেছেন তার কারণে শেখ হাসিনাকে দেশ থেকে বিদায় নিতে হয়েছে।
বুলু বলেন, ১৯৯০ সালে দেশকে সংকট থেকে উত্তরণের জন্য বিচারপতি সাহাবুদ্দিন যেমনি ৯০ দিনের মধ্যে একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য ভোট উপহার দিয়েছিলেন তেমন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ইউনূসও দ্রুত সময়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করে নির্বাচন উপহার দেবেন।
এ বিএনপি নেতা বলেন, ৫ আগস্ট সেনাবাহিনী যদি শেখ হাসিনাকে তার মাতৃভূমি ভারতে না পাঠাতো তাহলে দেশে আরও একটি ঘটনা ঘটতো। আমাদের সেনাবাহিনী মুক্তিযুদ্ধের সেনাবাহিনী। তারা যদি ১৯৭১ সালে পাকিস্তান আর্মিতে বিদ্রোহ ঘোষণা না করতো এবং তরুণ মেজর জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা না দিতেন তাহলে দেশ স্বাধীন হতো না। সেনাবাহিনী হলো দেশপ্রেমিক। সেনাবাহিনীকে নিয়ে যারা বিতর্ক করতে চায় তারা স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের শত্রু।
বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, ৫০টি জোটের একটি কথা, তা হলো- জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে এবং নির্বাচিত সরকার ছাড়া দেশের সংকট নিরসন করার কোনো বিকল্প পথ নেই। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়, বিদেশি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে এবং একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায় তারাই গণভোটের নামে হ্যাঁ-না ভোট চায়। তারা নির্বাচিত সরকার আসুক তা চায় না । তারা চায় অনির্বাচিত সরকার। তাদের মাথায় এসব চিন্তা আসে।
অনুষ্ঠানে বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি বাবু কামাখ্যা চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সদস্য ও বরকত উল্লাহ বুলুর সহধর্মিণী শামীমা বরকত লাকী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হক আবেদ, চৌমুহনী পৌরসভা বিএনপির সভাপতি জহির উদ্দিন হারুন, সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলম প্রমুখ।
হাসিব আল আমিন/আরএআর