আ.লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়ে গেছে, এটার আর পুনর্জাগরণ হবে না

গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক নুরুল হক নুর বলেছেন, প্রভাবশালী সরকার প্রধান ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উৎপাতে এলাকায় থাকতে পারেনি মানুষ। এখন শেখ হাসিনাও নাই আওয়ামী লীগের উৎপাতকারীরাও নাই, সব পালিয়ে গেছে। বাংলাদেশের ৫৩ বছরের রাজনৈতিক ইতিহাসে এ ধরনের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও পরিবেশ আগে তৈরি হয়নি যে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে একেবারে নেতাকর্মীরা পোটলা-পাটলি নিয়ে পালিয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের পালাতে হয়েছে। এই পলায়নের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মৃত্যু হয়ে গেছে, এটার আর পুনর্জাগরণ হবে না।
তিনি বলেন, যে কারণে আওয়ামী লীগকে মানুষ ঘৃণা করেছে, দেশ থেকে বিতাড়িত করেছে। আবার যদি কোনো রাজনৈতিক দল সে কাজ করে তাহলে তাদেরও একই পথে একইভাবে বিতাড়িত করবেন।
বুধবার (২ এপ্রিল) বিকেলে ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার মুজিব নগর ইউনিয়ন গণঅধিকার পরিষদের আয়োজন এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন নুরুল হক নুর।
তিনি বলেন, গত ১৬ বছরে রাজনৈতিকভাবে বিএনপি-জামায়াত ১৮ দল ২০ দল মিলে আন্দোলন হয়েছে কিন্তু কোনো আন্দোলন করে সরকার পরিবর্তন করতে পারেনি। সরকার যেভাবে দেশের মধ্যে সেটআপ করেছিল প্রশাসন এবং পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারত, সে সেটআপের কাছে আন্দোলন বারবার ব্যর্থ হয়েছে। জুলাইয়ের অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা, বিশেষ করে ছাত্র তরুণ যুবকদের একটা আপসহীন লড়াই এই অসাধ্যকে সাধন করেছে। এই আন্দোলনে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের চেয়ে সাধারণ মানুষ বেশি মারা গেছে। সাধারণ মানুষ আন্দোলনে নেমেছিল, তারা গত ১৬ বছর ধরে আওয়ামী লীগের অত্যাচার চাঁদাবাজি ধান্ধাবাজি দখলবাজি এগুলো দেখেছে। দেশের টাকা বাইরে পাচারের ফলে দেশের অর্থনীতিতে একটা বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছিল। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, উন্নয়নের নামে লুটপাট হয়েছে।
আরও পড়ুন
গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক বলেন, ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সারা দেশের মানুষের মধ্যে একটা জাগরণ ঘটিয়েছিলাম। সেটা পরে রাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে গড়ে তুলি।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে নুরুল হক নুর বলেন, প্রতিহিংসার রাজনীতি দিয়ে ভালো কিছু হবে না। প্রতিহিংসার রাজনীতিকে জিইয়ে রেখে সমাজে রাষ্ট্রে সংঘাত সহিংসতা বজায় রাখতে চাই না। আমরা একটি সম্প্রতি সহনশীলতার রাজনীতি চাই, ভালোবাসা ভালো লাগার রাজনীতি চাই। যারা রাজনীতি করবে তারা দখলবাজি চাঁদাবাজি লুটপাট করবে না। জনগণের সেবার জন্য রাজনীতি করবে। জনসেবামূলক রাজনীতিতে যারা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে ভুল স্বীকার করে জনগণের কাতারে আসবে তাদের আমরা ক্ষমা করে দেব এবং তাদের নিয়ে আগামীর নতুন বাংলাদেশ নতুন আঞ্চলিক রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করব।
উপস্থিত সাধারণ মানুষের উদ্দেশে তিনি বলেন, কিছু টাকা পকেটে নিয়ে দুর্বৃত্তদের চাঁদাবাজদের দখলবাজদের ভোট দিলে পাঁচ বছর ভুগবেন। সুতরাং এই আন্দোলন সংগ্রাম আমরা সবাই মিলে করেছি, কাজেই আগামীর বাংলাদেশ আমরা সবাই মিলে গড়তে চাই। কেমন বাংলাদেশ গড়ে তুলবেন কেমন নেতৃত্ব সমর্থন করবেন সে সিদ্ধান্ত আপনাদের।
মতবিনিময় সভায় দুলারহাট থানা গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব মাহিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে দেন গণঅধিকার পরিষদ ভোলা জেলার সাবেক সদস্য সচিব আতিক রহমান মো. আবু তৈয়ব, যুব অধিকার পরিষদের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ফখরুল ইসলাম, লালমোহন উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
মো. খাইরুল ইসলাম/এসএসএইচ