টাঙ্গাইলে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা, উৎসবে মাতলেন স্থানীয়রা

টাঙ্গাইলে ঈদের আনন্দকে বাড়িয়ে দিতে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। একই সঙ্গে গ্রামীণ হাঁড়ি ভাঙা, বালিশ খেলা, সাইকেল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় স্থানীয়সহ আশপাশের হাজারো মানুষের ঢল নামে।
সোমবার (৩১ মার্চ) বিকেলে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার দ্যাইনা ইউনিয়নের চিলাবাড়ি স্কুল মাঠে এসব প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
৮৩ বছর ধরে ঈদুল ফিতরের প্রথম দিনে দ্যাইনা ঘোড়দৌড় কমিটি দ্যাইনা সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় ও গ্রামীণ বিভিন্ন খেলার প্রতিযোগিতা এবং মেলার আয়োজন করে আসছে। প্রতিযোগিতার মূল আকর্ষণ ছিল ঘোড়দৌড়।
ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসে নানা বয়সী মানুষ। কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে উঠে স্কুল মাঠ। ঘোড়দৌড় ছাড়াও গ্রামীণ হাঁড়ি ভাঙা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া মেয়েদের বালিশ খেলা এবং ছেলেদের সাইকেল প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। অনেকেই বাড়ির ছাদের ওপরে বসে ঈদ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এমন প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন। এসব প্রতিযোগিতা উপলক্ষ্যে স্কুল মাঠের আঙ্গিনায় মেলাও বসে।
বিনোদনের মাত্রা বাড়িয়ে দিতে নাগরদোলা ও চকরাসহ শিশুদের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে রাইডের ব্যবস্থা ছিল। মেলায় হরেক রকমের পণ্য নিয়ে পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা।
দর্শনার্থীরা বলেন, ঈদের দিন এমন আয়োজন বিনোদনের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে আমরা সবাই মুগ্ধ। পরিবার পরিজন দিয়ে আমরা উপভোগ করেছি। প্রতি বছরই এমন আয়োজন অব্যাহত রাখার দাবি করছি।
৬৫ বছরের বৃদ্ধ আজিজুল ইসলাম বলেন, ছোটবেলা থেকেই ঘোড়া দৌড়সহ বিভিন্ন খেলা দেখে আসছি। মুরব্বিসহ সকল বয়সের মানুষ উপভোগ করছি।
আরিক নামের এক দর্শনার্থী বলেন, বিনোদনের শ্রেষ্ঠ মাধ্যম হচ্ছে গ্রামীণ এসব প্রতিযোগিতা। ছেলেমেয়ে নিয়ে দেখতে এসেছি। দেখে খুব ভালো লেগেছে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মও যাতে এমন আয়োজন দেখতে পারে।
সানজিদা ও আফরিন নামে দুই শিশু বলে, বাবা-মায়ের সাথে ঘোড়া দৌড়সহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতা দেখেছি। এতে আমাদের অনেক ভালো লেগেছে।
এ ব্যাপারে সানজিদা করিম কুরআন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা রেজাউল করিম বলেন, ৮৩ বারের মতো এমন আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের পূর্ব পুরুষরা এমন আয়োজন করেছেন, এরই ধারাবাহিতায় আমরাও এ ধরনের আয়োজন করেছি। এ ধারা অব্যহত থাকবে।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল বলেন, ঈদের আনন্দের মাত্রা আরও যোগ করতে এমন আয়োজন প্রশংসনীয়। আশা করছি এমন আয়োজন অব্যাহত থাকবে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল। প্রধান আলোচক ছিলেন সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রৌফ।
সানজিদা করিম কুরআন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি হাদিউজ্জামান সোহেল, সহ-সভাপতি, মামুন সরকার, জেলা তাঁতী দলের সাবেক আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক রাকিব হোসেন, সদর উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ।
আরএআর