রংপুরে ঈদ উপহার পেলেন ১৫০ জন কবরখোদক
‘গোরস্থানের নির্জনতায় যাদের বিচরণ, ঈদ উৎসবে করি তাদের শ্রদ্ধায় স্মরণ’—এই স্লোগানে রংপুরে কবরখোদক ও মরদেহ গোসলকারী ১৫০ জনকে ঈদ-সামগ্রী ও নগদ অর্থ সহায়তাসহ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২৯ মার্চ) রংপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘বাংলার চোখ’ ও ‘তানবীর ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন’ যৌথভাবে ব্যতিক্রমধর্মী এ আয়োজন করে।
একই অনুষ্ঠানে হিজড়া জনগোষ্ঠী ও নিম্নআয়ের কর্মচারীদেরও ঈদ উপহার প্রদান করা হয়। পরে সেখানে আলোচনা সভা শেষে ইফতার পূর্ব মোনাজাতে বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, শান্তি, সমৃদ্ধ ও কল্যাণ কামনা করে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
বিজ্ঞাপন
বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৭২ ব্রিগেড কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুমায়ুন কাইয়ুম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলার চোখের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো. তানবীর হোসেন আশরাফী।
বিজ্ঞাপন
প্রত্যেককে সেমাই, চিনি, চাল, আতপ চাল, আলু, সোয়াবিন তেল ছাড়া পাঞ্জাবি, লুঙ্গি ও নগদ অর্থসহ মোট ৪ হাজার টাকার ঈদ উপহার প্যাকেজ তুলে দেওয়া হয়। সবমিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৬ লাখ টাকার ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়।
কবরখোদক আবুল কাশেম কাচু মিয়া বলেন, দিন-রাত আমাদের কবর খুঁড়তে হয়, কিন্তু আমাদের খোঁজ কেউ রাখে না। বাংলার চোখ আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে, এজন্য আমরা খুব খুশি।
মুন্সিপাড়া কবরস্থানের দাফন কাজে নিয়োজিত আতিয়ার বলেন, ২০০৭ সাল থেকে কবরস্থানের দেখাশোনা করছি, কেউ কখনো খোঁজ নেয়নি। তানবীর ভাই আমাদের ঈদ উপহার দিয়েছেন, যা আমাদের জন্য অনেক বড় সাহায্য।
ব্যতিক্রমী এ উদ্যোগ প্রসঙ্গে বাংলার চোখের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মো. তানবীর হোসেন আশরাফী বলেন, সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে সম্মানিত করা হলেও কবরখোদক ও মরদেহ গোসলকারীদের প্রতি কারো দৃষ্টি পড়ে না। তাই তাদের সম্মানিত করতেই আমাদের এই উদ্যোগ। ভবিষ্যতেও এমন সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
ঈদ উপহারসামগ্রী বিতরণ শেষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও পেশাজীবী সংগঠনের বিশিষ্টজনদের সম্মানে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এ আয়োজনের আহ্বায়ক মিজানুর রহমান মিজান ও সদস্য সচিব মোকাররম হোসাইন জানান, আগামীতে আরও বড় পরিসরে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সহায়তা দিতে বাংলার চোখ এ ধরনের করবে।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএমকে