‘ছেলেকে ছাড়া এবার প্রথম ঈদ, এটা কষ্টকর’

‘ছেলেকে ছাড়া এবার প্রথম ঈদ। এটা কষ্টকর। ওর মা (রোকেয়া খাতুন) সারা রাত জেগে ইবাদত করেছে। ছেলেকে নিয়ে ঈদের মুহূর্তের কথা বললে সে সহ্য করতে পারবে না। জ্ঞান হারিয়ে ফেলবে। আমি ছেলে মানুষ অনেক কষ্টে আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি। ওর মা কথা বলতে পারবে না।’
বিজ্ঞাপন
রাজশাহী নগরীর তালাইমারী এলাকায় গত ৫ আগস্ট আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ সাকিব আনজুমের বাবা মাইনুল হক কান্নাজড়িত কণ্ঠে এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ঈদের সময়ে দোকান নিয়ে আমরা খুব ব্যস্ত থাকি। দোকানের সমস্ত কাজে সে সহযোগিতা করতো। ভারি ভারি কাজগুলো সে করত। ঈদের সময়ে ফজরের নামাজের আগ দিয়ে তিনটা-চারটার দিকে বাড়িতে আসতাম। এক-দুই ঘণ্টা ঘুমিয়ে ঈদের নামাজ পড়ে এসে সকালে খাওয়া-দাওয়া করে আবার ঘুমাতাম। সন্ধ্যার দিকে ছেলের সঙ্গে সবাই মিলে শহীদ মিনার নদীর ধারে বেড়াতে যেতাম। এছাড়াও ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিনগুলোতে সে বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে বেড়াতে যেত।
বিজ্ঞাপন
ঈদকে কেন্দ্র করে ছেলে সাকিব আনজুমের পছন্দ নিয়ে মাইনুল হক বলেন, পছন্দের খাবার ছিল- দই, মিষ্টি, গরুর মাংস। আমার ছেলে খুব ভালো ভালো জামা-কাপড় পড়তো। পাঞ্জাবি, জিন্সের প্যান্ট, পায়জামা পড়ত। বর্তমানে সাকিব আনজুমের স্ত্রী তাদের বাড়িতে থাকেন।
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, একজন শহীদের পিতা ৬২ বছর বয়সে ১০ থেকে ১২ ঘণ্টা কর্ম (কাজ) করে তার সংসার চালায়। এদেশে অনেক জালেম, মুনাফেক, জ্ঞানপাপি আছে; তারা কর্ম না করে রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এটাই আমার দুঃখ। এদের যেন বিচার হয়।
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, ৫ আগস্ট রাজশাহীতে ছাত্র-জনতার সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাদের সংঘর্ষের সময় শাহ মখদুম কলেজের পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সাকিব আনজুম। তাকে দুই দফায় গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের ছাত্র ছিলেন।
শাহিনুল আশিক/আরএআর