মুরাদনগর থানার ওসিসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কুমিল্লার মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুরাদনগর উপজেলার ওবায়দুল হক সিদ্দিকীসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১১ নম্বর আমলি আদালতে মামলাটি করা হয়।
বিজ্ঞাপন
মুরাদনগর উপজেলার নবীপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কালামের ছোট ভাই মেহেদী হাসান বাদী হয়ে মামলাটি করেন।
মামলায় মুরাদনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমানকে ১ নম্বর এবং উপজেলার সমন্বয়ক ওবায়দুল হক সিদ্দিকীকে দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও মোট ২৫ জনের নাম উল্লেখ করা হয় মামলার এজাহারে।
বিজ্ঞাপন
বাদীপক্ষের আইনজীবী মো. আব্দুর রাজ্জাক ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২ নম্বর আসামি সমন্বয়ক ওবায়দুল হক সিদ্দিকীসহ এজাহারে উল্লেখ করা বাকী ২৩ জন চাঁদাবাজির সাথে সম্পৃক্ত। ওসি জাহিদুর রহমান পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের একজন সুবিধাভোগী এবং অনুগত কর্মকর্তা।
বিজ্ঞাপন
বাদীর ভাই শ্রমিকদল নেতা আবুল কালাম পেশায় একজন সিএনজি চালিত অটো রিকশাচালক। গত ২৪ মার্চ সমন্বয়ক উবায়দুল হক সিদ্দিকীসহ এজাহারে উল্লেখ করা অন্যরা শ্রমিক দল নেতা আবুল কালামের কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। এ সময় শ্রমিক দল নেতা আবুল কালাম চাঁদা দিতে অস্বীকার করে প্রতিবাদ করলে সমন্বয়ক ওবায়দুল হক মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমানকে ফোন করে ঘটনার বিস্তারিত জানান। খবর পেয়ে ওসি জাহিদুর রহমান একদল পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে শ্রমিক দল নেতা আবুল কালামকে আটক করে থানায় নিয়ে যান।
পরে শ্রমিক দল নেতা আবুল কালামের ভাই মেহেদী হাসান মুরাদনগর থানায় গিয়ে আবুল কালামকে ছেড়ে দিতে ওসিকে অনুরোধ করেন। এ সময় ওসি জাহিদুর রহমান আবুল কালামের ভাই মেহেদী হাসানের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। মেহেদী হাসান সেই ঘুষ দিতে অস্বীকার করলে ওসি জাহিদুর রহমান তাকে হুমকি দেন।
পরে আবুল কালামের আটকের খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন মুরাদনগর থানার উপস্থিত হলে ওসি জাহিদুর রহমান হ্যান্ড মাইক দিয়ে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ নেতাদের উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে মব সৃষ্টি করে মুরাদনগর থানা চত্বরে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে এবং থানা চত্বরে ভাঙচুর চালায়। এ সময় দুই নম্বর আসামি সমন্বয়ক ওবায়দুল হক সিদ্দিকীসহ তার সাথে থাকা অন্যরা বাদী মেহেদী হাসানকে পিটিয়ে যখম করে।
আইনজীবী আব্দুর রাজ্জাক ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মুরাদনগর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মামলার বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনো কোনো কাগজ পায়নি। মামলা হলে আইনি মোকাবিলা করা হবে।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২৪ মার্চ) রাতে চাঁদাবাজির অভিযোগে নবীপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কালামকে আটক করে মুরাদনগর থানা পুলিশ। পরে উপজেলা যুবদল নেতা মাসুদ রানার নেতৃত্বে ৭০ থেকে ৮০ জনের একদল দুর্বৃত্ত শ্রমিক দল নেতা আবুল কালামকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলা চালান। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে একটি এবং সমন্বয়ক বাদী হয়ে থানা একটি মামলা করেন। এ ঘটনায় শ্রমিক দল নেতাসহ মোট ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।
আরিফ আজগর/আরএআর