হামলাস্থলে হান্নান মাসউদ, বললেন ‘মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত’

মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা নিয়ে হামলাস্থলে গেলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদ। এ সময় তিনি আহত ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলেন। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) বিকেলে মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে জাহাজমারা বাজার ঘুরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
এ সময় হান্নান মাসউদ বলেন, পালিয়ে যাওয়ার লোক আমরা নই, মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত আছি। জন্ম যেখানে মৃত্যুও সেখানে হবে ইনশাআল্লাহ। এ মাটির প্রতি আমার দায় আছে, দরদও আছে। এই মাটির মানুষের প্রতি ভালোবাসাও আছে। আমরা সন্ত্রাসকে কোনো জায়গা দেব না। প্রয়োজনে আমরা বারবার আঘাত পাব তবুও হাতে লাঠি নেব না এবং আগামীর রাজনীতিতে হাতিয়ার মানুষ লাঠিয়ালদের না, শান্তিপ্রিয়দের জায়গা দেবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা সমাজ পরিবর্তনের কথা বলি, সুষ্ঠু রাজনীতির কথা বলি। আমরা বলি পরিবর্তন দরকার। গতকাল এই জায়গায় বিরোধী দলের নেতারা বক্তব্য দিচ্ছে আপনাদের (বিএনপি) সহ্য হচ্ছে না। তাহলে ভোটের দিনে ভোটকেন্দ্র দখল করবেন যাতে ভোট না দিতে পারে। আপনাদের মধ্যে আর আওয়ামী লীগের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? আপনারা বলেন আমরা আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করছি। কিন্তু আপনাদের অঙ্গে অঙ্গে আওয়ামী লীগের চরিত্র দেখা যাচ্ছে। আপনাদের প্রত্যেকটি বৈশিষ্ট্য আওয়ামী লীগের বৈশিষ্ট্য। হাতিয়ার রাজনীতিতে কোনো সংঘাত চাই না। আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে এবং চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করব। এর জন্য যদি আঘাত কিংবা মৃত্যু হয় তাহলে হব। আমি বারবার বলছি আমরা মারামারিতে বিশ্বাসী নই, আমরা শান্তিতে বিশ্বাসী।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, গতকাল সোমবার (২৪ মার্চ) দিনব্যাপী জাহাজমারা ইউনিয়নের বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে দেখা করেন আব্দুল হান্নান মাসউদ। কিন্তু সন্ধ্যায় জাহাজমারা বাজারে গেলে বিএনপির নেতাকর্মীরা তার জনসংযোগে বাধা ও হামলা করে। এ সময় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে সড়কেই ছাত্র-জনতাকে নিয়ে অবস্থান করেন আবদুল হান্নান মাসউদ। রাত ৩টা পর্যন্ত মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে উভয় পক্ষই মাঝেমাঝে স্লোগান দিচ্ছিল। পরিস্থিতি সামাল দিতে উভয়পক্ষের মাঝখানে পুলিশ, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড সদস্যরা অবস্থান নেন।
এ বিষয়ে হাতিয়া উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লুৎফুল্লাহিল মজিদ নিশান ঢাকা পোস্টকে বলেছিলেন, সন্ধ্যার আগে উপজেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক অব্দুর রবকে পিটিয়ে আহত করা হয়। এর প্রতিবাদে জাহাজমারা বাজারে একটি প্রতিবাদ মিছিল বের করেন বিএনপির নেতকর্মীরা। মিছিলটি পশ্চিম দিক থেকে পূর্ব দিকে গেলে হান্নান মাসউদের পথসভার সামনে পড়ে। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। এনসিপির হামলায় আমাদের অন্তত ৩০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
হাতিয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম আজমল হুদা ঢাকা পোস্টকে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। কোথাও কোনো ঝামেলা নেই। থানায় কোনো পক্ষই অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আমরা তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
হাসিব আল আমিন/এমজেইউ