অস্থিতিশীলতা আমাদের কারও জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না

রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান সেনাবাহিনীসহ অনেককেই নানাভাবে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেন, দেশে নানা ধরনের অস্থিতিশীলতার চেষ্টা চলছে। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান সেনাবাহিনীসহ অনেককেই নানাভাবে মুখোমুখি দাঁড় করানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই ধরনের অস্থিতিশীলতা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করতে পারে। অস্থিতিশীলতা আমাদের কারও জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে না।
রোববার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় রংপুর নগরীর রুপকথা কমিউনিটি হলে আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া যাতে অব্যাহত থাকে সেজন্য সকল রাজনৈতিক পক্ষ, সকল বক্তিবর্গ এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান জোনায়েদ সাকি।
তিনি বলেন, আমাদের সকলকে এমন ভূমিকা নেওয়া উচিত যাতে করে এদেশের মানুষের স্বপ্নকে সত্যে পরিণত করতে পারি। যারা অস্থিতিশীলতা তৈরি করছেন তারা যেন দায়িত্বশীল আচরণ করেন।
জোনায়েদ সাকি বলেন, দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনতে হবে। শেখ হাসিনা নিজেই হত্যার নির্দেশ দিয়েছেন। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে নারী ও শিশুকে হত্যা করেছে। শেখ হাসিনাসহ যারা হত্যার সঙ্গে জড়িত তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, নানাভাবে ষড়যন্ত্র চলছে, তৌহিদি জনতার নামে মব আক্রমণ চলছে, বিভিন্ন গোষ্ঠীর ওপর হামলা হচ্ছে, নারীর ওপর চলছে, বিভিন্ন মাজারে হামলা চলছে, ধর্মীয় কিংবা সংখ্যালঘু তাদের ওপরও হামলা চলছে। এ রকম কাজ বাংলাদেশকে ওই ভারতীয় মিডিয়া, ভারতের শাসক দল, যেভাবে সারা দুনিয়ায় হাজির করতে চায়, সেই চেষ্টাকে সাহায্য করবে। যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান তুলশি গ্যাবার্ড বাংলাদেশ সম্পর্কে কী ধরনের মন্তব্য করেছেন আপনারা দেখেছেন। এই সব মন্তব্য নানাভাবে তৈরি করা হচ্ছে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী বলেন, ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসকের পতন ঘটেছিল। মানুষ গণতন্ত্রের আশা করলেও আমরা দেখেছি রাষ্ট্র ব্যবস্থার মৌলিক কোনো পরিবর্তন হয়নি। যথার্থভাবে লক্ষ্য ও কর্মসূচি হাজির না থাকায় ৯০ পরবর্তী সরকারগুলো একই রাষ্ট্র কাঠামোয় এসে মানুষের ভোটের অধিকার এবং জনগণের যে ক্ষমতা তা কেড়ে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে নিজেদের দাবি করা তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা তুলে দেয়। সমস্ত রাষ্ট্রযন্ত্রকে পকেটে ভরে মানুষের ভোটের অধিকার কেড়ে নেয়। ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে। ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে তিন তিনটি জাতীয় নির্বাচনকে তামাশায় পরিণত করে। রাতের আঁধারে ভোট ডাকাতি করে, ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে কিংবা নিজেদের দল থেকে ডামি প্রার্থী নির্বাচন করে মানুষের সঙ্গে প্রহসন করেছে।
গণসংহতি আন্দোলন রংপুর মহানগরের আহ্বায়ক মো. আব্দুল জব্বারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, গণসংহতি আন্দোলন রংপুর জেলার আহ্বায়ক তৌহিদুর রহমান, সদস্য সচিব মুফাখখারুল ইসলাম মুন, গণসংহতি আন্দোলনের নেতা রফিকুল ইসলাম, আল মেহেদী প্রমুখ।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর