কুমির আতঙ্কে গড়াই নদীতীরের তিন জেলার মানুষ

রাজবাড়ী, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার সীমানা দিয়ে বয়ে যাওয়া গড়াই নদীতে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কুমির আতঙ্ক বিরাজ করছে। নদীতীরের বাসিন্দাদের দাবি কখনো একটা, কখনো তিন থেকে চারটা কুমির দেখেছেন তারা। এতে আতঙ্কের মধ্যে দিন পার করছেন ওই জেলার মানুষ।
বিজ্ঞাপন
এদিকে কুমির দেখতে নদীপারে ভিড় করছে স্কুলের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঝিনাইদহের শৈলকূপা উপজেলার হাকিমপুর ইউনিয়নের খুলুমবাড়ি গ্রামের ঘাট এলাকায় গড়াই নদীতে পানি কমে যাওয়ায় কুমির হরহামেশাই দেখা মিলছে। এই জায়গায় তিন-চারটি কুমির বিচরণ করছে।
বিজ্ঞাপন
আবার রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার কসবামাজাইল ইউনিয়নের কেওয়া গ্রামের গড়াই নদীর মোহনের ঘাট এলাকার নদীপাড়ে কুমির দেখার খবর পাওয়া যাচ্ছে। তাই কুমির দেখতে প্রতিদিন নদীপাড়ে ভিড় করছে মানুষ। নদীতে কুমির ভেসে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কেউ কেউ মোবাইলে ভিডিও করে রাখছেন। আবার অনেকেই দিনের পর দিন নদীর পাড়ে এসেও দেখা পাননি কুমিরের।
আরও পড়ুন
বিজ্ঞাপন
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেজবুকে গড়াই নদীতে কুমিরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। এসব খবর ছড়িয়ে যাওয়ার ফলে মাগুরা জেলাসহ তিন জেলার নদীতীরের মানুষ কুমির আতঙ্কে রয়েছেন।
শ্রীপুর উপজেলার লাঙ্গালবাঁধ এলাকার বাসিন্দা মো. সাকিব খান বলেন, প্রতিদিন এলাকার শতাধিক মানুষ এই নদীতে গোসল, জামা-কাপড় ধোয়াসহ দৈনন্দিন বিভিন্ন কাজে পানি ব্যবহার করেন। এখন কুমির আতঙ্কে কেউ নদীতে নামতে পারছেন না।
গোয়ালদহ এলাকার বাসিন্দা বিকাশ বাছাড় বলেন, গড়াই নদীতে কুমির আতঙ্ক চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ায় নদীতে কাউকে গোসল ও গরু-ছাগল গোসল করাতে দেখা যায়নি। নদী পাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। জেলেরা নদীতে মাছ স্বীকার করতেও সতর্কতা অবলম্বন করছেন।
পদ্মা নদীর সঙ্গে সংযুক্ত গড়াই নদীটি বয়ে গেছে রাজবাড়ী, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার সীমান্ত দিয়ে। এই নদীতে আগে কখনো কুমিরের দেখা মেলেনি। কীভাবে কুমিরগুলো নদীতে আসল তাও কেউ বলতে পারছেন না।
তবে স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন, বর্ষা মৌসুমে নদীতে যখন পানি বেশি ছিল তখন হয়তো পদ্মা নদী হয়ে এখানে কুমির এসেছে। কিন্তু এখন নদীর পানি কমে গেছে, তাই কুমিরের দেখা মিলছে।
শ্রীপুর উপজেলা মৎস্য অফিসার মীর মো. লিয়াকত আলী বলেন, আমি লাঙ্গলবাঁধ এলাকায় গড়াই নদীতে গিয়েছিলাম। কুমির দেখতে পাইনি তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেছি, চারিদিকে কুমির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। আমি সবাইকে সতর্ক থাকতে বলেছি।
স্থানীয় বাসিন্দারা সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছেন, যেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায় এবং কুমির আতঙ্কের অবসান ঘটে বলে জানান এই মৎস্য কর্মকর্তা।
তাছিন জামান/এএমকে