ইউপি চেয়ারম্যানের ওপর গণঅধিকার পরিষদের নেতার ককটেল হামলা

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ককটেল হামলায় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ইউপি চেয়ারম্যানের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জেরে রাতে বারোঘরিয়া বাজারে হঠাৎ করে ৪টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাকিব ও তার লোকজন। এসময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যান তারা। এতে ইউপি চেয়ারম্যানসহ প্রায় ৫ জন আহত হন। পরে স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়দের মাধ্যমে জানা যায়, ৫ আগস্টের আগে রাকিব আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরে ভোল পাল্টে তিনি গণঅধিকার পরিষদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন।
বিজ্ঞাপন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের সূত্র জানা যায়, ককটেল বিস্ফোরণে আহত হয়ে ০৫ জন চিকিৎসা নিতে আসেন। এসময় ৪ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে রেফার করা হয়েছে।
বারোঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য মো. মুসা বলেন, রাকিব ব্যাগে করে বোম নিয়ে এসে ফুটাতে থাকে। এসময় আমার নাতিসহ অনেক আহত হয়েছে। এছাড়া বারোঘরিয়া ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন আর রশিদও আহত হয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
বারোঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন আর রশিদ বলেন, বারোঘরিয়া বাজারে বসে চা খাচ্ছিলাম। এসময় বাজারে বোমা বিস্ফোরণ করতে শুরু করে। এসময় আমাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। পরে দোকানের ভেতরে ঢুকে পড়লে প্রাণে বেঁচে যাই।
বারোঘরিয়া বাজারের কাপড়ের দোকানদার আতাউর রহমান বলেন, হঠাৎ করে বিকট শব্দে চারদিকে অন্ধকার হয়ে যায়। মোটরসাইকেলে রাকিবসহ আরও দুইজন ছিলেন। তারা ককটেল ছুঁড়ে মারছে আর চলে যাচ্ছে। রাকিব আগে আওয়ামী লীগ করতেন। তিনি আগে থেকেই সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ ছিলেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক আনোয়ার মাহমুদ বলেন, আমাদের এখানে পাঁচজন রোগী এসেছিলেন। তাদের কাছে জানতে পারি বারোঘরিয়াতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে এবং সেখানে তারা আহত হন। পাঁচজনের মধ্যে একজনের অবস্থা আশংকাজনক। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়েছে এবং বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির সিফতি বলেন, লোকজনের কাছে শুনেছি রাকিব বারোঘরিয়া বাজারে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তবে যে বা যারাই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে প্রশাসন তদন্ত করে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসুক এটাই চাই।
তিনি আরও বলেন, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠার কারণে গত ০৬ ফেব্রুয়ারি তাকে গণঅধিকার পরিষদ থেকে এক মাসের জন্য সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, বারোঘরিয়া বাজারে ৪টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে ইউপি চেয়ারম্যান হারুন আর রশিদের সঙ্গে পূর্ব শত্রুতার জেরে রাকিব ও তার লোকজন ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে।
মো. আশিক আলী/এমএন