নেত্রকোণায় যুবককে হত্যার দায়ে আটজনের যাবজ্জীবন

নেত্রকোণায় পরকীয়ার জেরে মামুন মিয়া নামের এক যুবককে হত্যার দায়ে আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এই রায় দেন।
যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, সদর উপজেলার দরুনবালী গ্রামের আশিক মিয়া, দরুনবালী গ্রামের সিদ্দিকুর রহমান, হুমায়ুন কবির হাবলু, বিরাম খাঁ, রুবেল মিয়া, হুমায়ুন কবির, মৌজেবালী গ্রামের মো. ফজলুল হক ও জুয়েল মিয়া।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নেত্রকোণা সদরের দরুনবালী গ্রামে ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাতে মামুন মিয়া, রাতের খাবার শেষে পাশের চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে গিয়ে আর বাড়ি ফেরেননি। পরদিন গ্রামের এক পুকুরপাড় থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় ২০১৯ সালের ২০ সেপ্টেম্বর নিহতের মা ফাতেমা আক্তার বাদী হয়ে আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া আলামতের ভিত্তিতে হুমায়ুন কবির হাবলু নামে একজনকে আটক করে। আটকের পর সে মামুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করেন। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আরো সাতজনকে সনাক্ত করে পুলিশ। এছাড়াও ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া একটি সানগ্লাসের সূত্র ধরে এই মামলার প্রধান আসামি মো. আশিক মিয়াকে শনাক্ত করে পুলিশ।
মামলা সূত্রে আরো জানা যায়, মূলত নিহত মামুন মিয়ার স্ত্রী পারভীন আক্তারের সাথে আসামি আশিক মিয়ার অবৈধ সম্পর্ক ছিল। এরই জের থেকে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন আশিক মিয়া। ঘটনার দিন ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ দিবাগত রাতে, আশিক মিয়াসহ আটজন মিলে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে পুকুরের পাশের একটি ধান খেতে নিয়ে মামুন মিয়াকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর মরদেহ পাশের পুকুর পাড়ে ফেলে রাখেন যা আদালতে প্রমাণিত হয়।
সুরতাল রিপোর্ট ও হাসপাতাল থেকে দেওয়া রিপোর্টের সাথে আসামিদের স্বীকারোক্তির মিল থাকায় এ ঘটনায় আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রের আনা দণ্ডবিধি ৩০২ ও ৩৪ ধারা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় প্রত্যেককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদ দণ্ডিত করেন আদালত। এদিকে আসামিদের মধ্যে সাতজন উপস্থিত থাকলেও এখনো পলাতক রয়েছে আরেক আসামি বিরাম খাঁ।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি হিসেবে ছিলেন, পাবলিক প্রসিকিউটর মো. আবুল হাশেম এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অ্যাডভোকেট জমির কান্তি সরকার, অ্যাডভোকেট মো. শহিদুল্লাহ, অ্যাডভোকেট মো. জিয়া উদ্দিন খান, মো. মনোয়ারুল হক। স্টেট ডিফেন্স হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট পুরুবী কুনডু।
চয়ন দেবনাথ মুন্না/এমএএস