নোবিপ্রবিতে দেখা মিলল বিষধর পদ্ম গোখরার, আতঙ্কে শিক্ষার্থীরা

নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) দেখা মিলেছে প্রায় তিন ফুট দৈর্ঘ্য বিষধর পদ্ম গোখরার। শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনসার ব্যারাকের সামনে সাপটির দেখা মেলে। এ ঘটনায় পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে সাপ আতঙ্কে ভুগছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তানভিরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ক্যাফেটেরিয়ার পাশেই আনসার সদস্য মনির রঞ্জন দে প্রথমে সাপটিকে দেখতে পান। নিরাপত্তার খাতিরে আনসাররা পরবর্তীতে সাপটিকে মেরে ফেলছেন। ক্যাফেটেরিয়ার পাশের জঙ্গলগুরো পরিষ্কার করা প্রয়োজন। চলাফেরা করার সময় সবাইকে সাবধানে থাকতে হবে।
মো. নোমান চৌধুরী নামের আরেক শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, গোখরার শরীরের ডিজাইন অনেক রকমই হয়। মাথা দেখে জাত আলাদা করা হয়। যে সাপটি দেখা মিলেছে তা পদ্ম গোখরা। প্রাণঘাতী বিষধর সাপ। জানামতে নোয়াখালী সদর হাসপাতালেও এর অ্যান্টিভেনম নেই, তাই চট্টগ্রাম মেডিকেলে রোগীকে নিয়ে যাওয়া লাগে।
আবাসিক হলের আরেক শিক্ষার্থী মোহন মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গা এখনো ঝোপঝাড় মুক্ত হয়নি। এসব ঝোপঝাড় প্রকৃতির আপন গতিতে বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সাপের উপদ্রবও বেড়েছে। এ জন্য প্রতিদিনই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। প্রশাসনের উচিত খুব দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর এএফএম আরিফুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ক্যাম্পাসে অনেক দিন সাপের দেখা পাওয়া যায়নি। তবে পদ্ম গোখরা দেখার পর শিক্ষার্থীদের ভেতর আতঙ্ক কাজ করছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেস্ট শাখার সঙ্গে আলাপ করে ক্যাফেটেরিয়া ও আনসার ব্যারাকের আশপাশের পরিষ্কারের ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
নোবিপ্রবি মেডিকেল সেন্টারের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার ডা. ইসমাত আরা পারভীন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের মেডিকেলে অ্যান্টিভেনম নেই। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানাব। তারা যদি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাহলে সবার জন্য ভালো হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. আতিকুর রহমান ভুঁইয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, সাপের আবাসস্থলে সাপ বসবাস করবে—এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। কিন্তু আমরা যদি আমাদের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন না রাখি তাহলে সাপ এসব স্থানে এসে বসবাস করবে। তবে বর্তমান প্রশাসন ক্যাম্পাসের ঝোপঝাড়গুলো প্রায় পরিষ্কার করেছেন। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যেন কোনো ক্ষতি না হয় সেই জন্য যেগুলো বাকি আছে সেগুলো দ্রুত পরিষ্কার করবে। এ ছাড়া রাসায়নিক কেমিক্যাল ব্যবহার করে সাপ তাড়িয়ে দেওয়া যেতে পারে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মুহাম্মদ ইসমাইল ঢাকা পোস্টকে বলেন, পদ্ম গোখরা সাপের দেখা পাওয়ার বিষয়টি জেনেছি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৯০ শতাংশ ঝোপঝাড় পরিষ্কার করা হয়েছে। আর শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদে চলাচল করতে পারে এজন্য ক্যাম্পাসে থাকা অবশিষ্ট ঝোপঝাড় দ্রুত পরিষ্কার করা হবে।
হাসিব আল আমিন/এএমকে