ঢাকা পোস্টে কাজ করে সম্মান পেয়েছি

করোনা নামক অজানা রোগ, নেই কোনো প্রতিষেধক। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চে করোনার প্রকোপ বাড়তে শুরু করলেও ভয়াবহতা ছিল ২০২১ সালে। চারদিকে আতঙ্ক। আক্রান্তের ভয়ে ঘরবন্দি মানুষ। বাহিরে বের হলেই রোগাক্রান্তের শঙ্কা। এমনই ভয়াবহতার মধ্যেই ২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি ‘সত্যের সাথে সন্ধি’ স্লোগান নিয়ে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় জনপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টের।
যখন ঘরে টেলিভিশন আর মোবাইলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আর অনলাইনই মানুষের নিত্যসঙ্গী। কোথায় কি হচ্ছে? নতুন করে আক্রান্ত আর মৃত্যুসহ সব খবর জানতে মানুষ চোখ রাখছে অনলাইনে। শুধু তাই নয়, ঘরে বসেই অনলাইনে অফিসের মিটিং, সভা, সেমিনার করেছে। এমনই ভয়াবহ পরিবেশ- পরিস্থিতিতেও হার মানেননি ঢাকা পোস্টের সহযোদ্ধারা। প্রতিনিয়ত সব আপডেট দিতে ভয় আর শঙ্কাকে পাশ কাটিয়ে ছুটে চলেছেন অদম্য গতিতে। রোগের প্রকোপ, রোগ প্রতিরোধে করণীয়সহ সব কিছুর সার্বক্ষণিক আপডেট ছিল ঢাকা পোস্টে। ঝুঁকি জেনেও থেমে থাকেনি ঢাকা পোস্টের কর্মীরা। চোখ রাঙানো করোনার হটস্পট থাকা অবস্থায়ও মাঠে থেকে পাঠকের নিউজের খোরাক জুগিয়েছেন তারা। এমনই এক ঝাঁক তরুণ, সাহসী, দক্ষ ও অভিজ্ঞ সহকর্মীদের সংস্পর্শে খুলনা থেকে আমি নিজেও কখনো পিছপা হয়নি। পাঠকের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করেছি।
করোনাকালে ২০২১ সালের ২৬ জানুয়ারি খুলনায় স্টাফ রিপোর্টার পদে যোগদান করি। যোগদানের কিছুদিন পর খুলনা বিভাগ ছিল দেশের মধ্যে করোনার হটস্পট। হটস্পটে খুলনা বিভাগে একদিনে সর্বোচ্চ ৭১ জন মানুষের প্রাণহানির ভয়াবহ ঘটনাও এই করোনা মহামারিতে ঘটেছে। তবুও দমেনি ঢাকা পোস্টের সৈনিকদের কলম। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লাইভ, সরেজমিন প্রতিবেদনসহ প্রতিনিয়ত আপডেট জানিয়েছি পাঠকদের।
শুধু করোনা মহামারিতেই নয়, ঢাকা পোস্টের সকল সহকর্মীদের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘূর্ণিঝড়ে উপকূলের মানুষের পাশে থেকে পাঠকদের কাছে সব আপডেট তুলে ধরেছি। খেলার মাঠ, তীব্র শীত, প্রচণ্ড গরম, ঝড়-বৃষ্টি, জলাবদ্ধতা, বন্যায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। এছাড়া অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো, আন্দোলনে টিয়ারগ্যাস সহ্য করে তথ্যসংগ্রহে মাঠে থাকা, সবশেষ ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে ঢাকা পোস্টে।
ঢাকা পোস্ট আমাকে শিখিয়েছে মানবিক হয়ে উঠতে। যেখানে অসহায় মানুষকে নিয়ে লেখার সুযোগ করে দিয়েছে। ঢাকা পোস্টের সঙ্গে পথচলায় অসহায় মানুষকে নিয়ে সংবাদ করার পর সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসে। এটাই আমার সাংবাদিকতার জীবনের অর্জন এটাই আমাকে সামনে এগিয়ে নিতে অনুপ্রাণিত করে।
ঢাকা পোস্টে নিউজ করার ফলে ঘুরে দাঁড়িয়েছে খুলনার সংগ্রামী নারী তসলিমা বেগম মুসলিমা। ২০২১ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর 'স্বামী হার্টের রোগী, সাইকেলে ফেরি করে সংসারের হাল ধরেছেন মুসলিমা’ শিরোনামে প্রকাশিত নিউজ দেখে তার পাশে দাঁড়িয়েছিল সমাজের বিত্তবানেরা। মানুষের আর্থিক সহযোগিতা পেয়ে বর্তমানে তিনি খালিশপুরের হাউজিং বাজারে একটি ভ্যারাইটিজ স্টোর ও চায়ের দোকান দিয়েছেন। বর্তমানে স্বামী সন্তান নিয়ে ভালো আছেন সংগ্রামী এই নারী।
২০২৩ সালের ১৩ এপ্রিল ‘নামের ভুলে আটকে আছে পাটকলের ২ হাজার শ্রমিকের শেষ সম্বল’ শিরোনামে প্রকাশিত ঢাকা পোস্টের সংবাদের পর পাটকল কর্তৃপক্ষের নজরে এলে শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের বিষয়ে কাজ শুরু করে। অসংখ্য শ্রমিক পরবর্তীতে তাদের পাওনা ফিরে পেয়েছেন।
২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট ‘ওজোপাডিকোর ৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের দুর্নীতি তদন্তের দাবি’ শিরোনামে ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূত্র ধরে একই বছরের ২২ ডিসেম্বর অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
২০২৪ সালের ১৩ মে ঢাকা পোস্টে ‘তবুও জিপিএ-৫ পেয়েছে আরিফা’ শিরোনামে একটি নিউজ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, প্রায় এক বছর ধরে কোমরে ব্যথা ও পেশিতে খিঁচুনি (muscle spasm) রোগে আক্রান্ত আরিফা বেশিক্ষণ বসে থাকতে না পারায় লেখাপড়া করেন শুয়ে থেকে। এবারের এসএসসি পরীক্ষার সময় কখনো বসে কখনো শুয়ে পরীক্ষা দেন। কয়েকদিন অ্যাম্বুলেন্সে করেও খুলনা জিলা স্কুল পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে হয়েছে তাকে। খুলনার সরকারি ইকবাল নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন। শুয়ে-বসে পরীক্ষায় অংশ নিয়েও পেয়েছেন জিপিএ-৫। বাবা আতিয়ার রহমান আনসার সদস্য এবং মা সুলতানা পারভীন গৃহিণী। দুই বোনের মধ্যে বড় আরিফা। খুলনা মহানগরীর ময়লাপোতা মোড় এলাকার একটি কোয়ার্টারে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন তারা। মেধাবী শিক্ষার্থী আরিফা এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেলেও অর্থাভাবে তার চিকিৎসা ও পরবর্তী লেখাপড়া নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। তার সহযোগিতায় এগিয়ে আসে খুলনা ব্লাড ব্যাংক এবং গণমাধ্যমের কর্মীরাও।
ঢাকা পোস্টের প্রতিবেদনটি নজরে এলে আরিফাকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন মানবিক ব্যক্তিরা। বিভিন্ন স্থান থেকে আরিফার জন্য সহযোগিতা আসে ৩ লাখ টাকা। আর ২৪ জুন রোটারী ক্লাব অব মতিঝিল শাখার নেতারা খুলনায় এসে ৪ লাখ টাকার চেক তুলে দেন আরিফা ও তার মায়ের হাতে। এরপর আগস্ট ও নভেম্বরে দুই দফায় ভারতে গিয়ে চিকিৎসা নেন আরিফ। বর্তমানে আগের চেয়ে ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন আরিফার মা সুলতানা পারভীন।
খেলার মাঠে দুই হাতের কব্জিহীন অদম্য আরমানের এগিয়ে চলার গল্প তুলে ধরা এবং পরবর্তীতে সেটি দেশজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। টেলিভিশন চ্যানেলগুলো আরমানকে নিয়ে বেশ কিছু স্টোরি করে এবং তাকে নিয়ে লাইভ প্রোগ্রাম করে।
এছাড়াও মেডিকেলে ভর্তি পরীক্ষায় মীম-সুশোভনের প্রথম হয়ে ওঠার গল্প, ট্রেন যাত্রায় নব দিগন্তের সূচনা, পদ্মাসেতু, সুন্দরবন, নদ-নদীতে ইলিশ বাড়লেও সাধারণের নাগালের বাইরে থাকার কারণ তুলে ধরা, দাম বৃদ্ধির নেপথ্যের ৭ কারণ, শ্রমজীবী মানুষের দুর্দশা, খুলনার উন্নয়নে নাগরিক নেতাদের দাবি তুলে ধরা, ডেঙ্গু, চিংড়িতে অপদ্রব্য পুশ, ভেনামী চিংড়ি চাষ ও সম্ভাবনা, নিউজপ্রিন্ট ও হার্ডবোর্ড মিল চালু না হওয়া, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, নগরীর জলবদ্ধতা, ডাকাতিয়ার বিলে জলাবদ্ধতা, কৃষি, মৎস্য, ভোটার, খুলনায় জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরাসহ নানা ধরনের নিউজ গুরুত্বের সঙ্গে স্থান পেয়েছে ঢাকা পোস্টে।
সহকর্মীদের অদম্যতায় দেশের সকল মানুষে আস্থা আর বিশ্বাসযোগ্য গণমাধ্যমে পরিণত হয় ঢাকা পোস্ট। মাত্র অল্পদিনেই দেশের মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নেয় নিউজ পোর্টালটি। পাঠকের আস্থা আর ভালোবাসায় আনুষ্ঠানিক যাত্রার মাত্র ১০ মাসেই ২০২১ সালের ১৬ ডিসেম্বর দেশের সকল অনলাই নিউজ পোর্টালকে পাশ কাটিয়ে অ্যালেক্সা র্যাঙ্কিং এ ১ নম্বরে পৌঁছে যায় ঢাকা পোস্ট। পাঠকপ্রিয় এই অনলাইন নিউজ পোর্টালটি এখনও পাঠকের আস্থা ধরে রাখতে সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পাঠকের চাহিদা পূরণে কাজ করে চলেছে।
এমন একটি মিডিয়াতে কাজ করতে পেরে গৌরববোধ করি। নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য ঢাকা পোস্ট পরিবারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি।
২০২১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক যাত্রা থেকে শুরু করে গুটি গুটি পায়ে ৫ বছরে পদার্পণ করছে প্রিয় প্রতিষ্ঠান ঢাকা পোস্ট। শুরু থেকেই এই প্রতিষ্ঠানে নিজের আকড়ে ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। গেল চার বছরে সমাজের নানা অসঙ্গতি, মানুষের অসহায়ত্ব, দুর্নীতি-অনিয়ম, রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সুন্দরবনের জন্য হুমকিসহ জীব-বৈচিত্র, প্রাণ-প্রকৃতি নিয়ে প্রতিবেদন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, উপকূলের মানুষের অবস্থা সরেজমিন প্রতিবেদন, খেলাধুলা, বিনোদন, অগ্নিকাণ্ড, উদ্ভাবনী সফলতা, তরুণ উদ্যোক্তা, অর্থনীতি, মৎস্য, কৃষি, উন্নয়ন, অসঙ্গতি সব কিছুই পাঠকের কাছে তুলে ধরেছি ঢাকা পোস্টের মাধ্যমে। আর এই সময়ে প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করতে গিয়ে নিজের সফলতার পাল্লাটাও ভারী হয়ে যায়।
ঢাকা পোস্টে কাজ করার মাত্র এক বছরের মাথায় সবচেয়ে বড় পুরস্কার পেয়েছি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে। প্রথম বছরেই দেশসেরা রিপোর্টারের ৫ জনের তালিকায় নিজের নামটি দেখে আশ্চর্য হয়েছিলাম। শুরুতে বিশ্বাসই হচ্ছিল না। কারণ প্রতিষ্ঠাবাীষিকীর অনুষ্ঠানের ব্যস্ততায় নিজের নামটি প্রথমে দেখিনি, তবে বিকেলে ফেসবুকে ঢুকে সহকর্মীদের পোস্ট আর টেলিফোনে চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধির কল পেয়ে অবাকই হয়েছি। পরে দেশসেরা রিপোর্টারদের ৫ জনের তালিকায় নিজের নামটি দেখে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যাই। মাকে সর্বপ্রথম কল করে আনন্দের খবরটি জানাই। তিনি খুব খুশি হন। এটাই আমার জীবনে বড় সাফল্য। আর এই সাফল্য আমাকে উপলব্ধি করিয়েছে প্রাণের প্রতিষ্ঠান ঢাকা পোস্ট। এরপর নানা কারণে সফলতা এসেছে।
দেশসেরা হওয়ার থেকে সফলতার স্বীকৃতি স্বরূপ ‘খুলনা গেজেট’ সম্মাননা স্মারক দিয়েছে, দৈনিক সময়ের খবরের সম্মাননা স্মারক পেয়েছি। পেয়েছি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে অবদান রাখায় খুলনা ব্লাড ব্যাংকের সম্মাননা স্মারক। রাজস্ব আদায়ে অবদান রাখায় পেয়েছি আয়কর বিভাগের সম্মাননা স্মারক। এছাড়াও সহকর্মী ও খুলনার মানুষের শ্রদ্ধা, স্নেহ আর ভালোবাসা আমাকে আপ্লুত করেছে। ঢাকা পোস্ট আমাকে শুধু দক্ষ করে তোলেনি, করেছে মানবিক, দায়িত্বশীল, সাহসী। আর বন্ধু সুলভ ব্যক্তিত্ব ও ধৈর্য ধারণের ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তি হিসেবেও গড়ে তুলেছে।
২০২৩ সালের ২০ অক্টোবর নড়াইলে সারা দেশের সহকর্মীদের নিয়ে ঢাকা পোস্টের মিলনমেলা করার সুযোগ করে দিয়েছিল। সেখানে ছিল না কোনো বাধা-বিপত্তি, ছোট-বড় এর ভেদাভেদ। সকল সহকর্মী কাঁধে কাঁধ, হাতে হাত মিলিয়ে মনের সুখে গল্প আর আড্ডায় মেতে উঠেছিলাম। করেছি দৌড়-ঝাঁপ, খেলাধুলা, খাওয়া-দাওয়া আর ফটোসেশন। সবকিছুর মধ্যেও ছিল নিউজ সংক্রান্ত নানাবিধ আলোচনা। অনুষ্ঠান সফলে সকলেই দারুণভাবে সহযোগিতা করেছে।
গত চার বছরে সফলতার মাঝে সবচেয়ে অমূল্য রত্নটি হারিয়েছি, সেটি হচ্ছে আমার মা। ২০২৩ সালের ১৫ আগস্ট সকাল ৬টার দিকে খুলনার শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। আল্লাহ আমার মাসহ সকল পিতা-মাতাকে জান্নাতবাসী করুন-আমিন। মা কে হারিয়ে প্রথমবারের মতো তাকে নিয়ে কিছু লেখার সুযোগ করে দিয়েছিল আমার প্রিয় প্রতিষ্ঠান ঢাকা পোস্ট। ২০২৪ সালের ১২ মে মায়ের স্মৃতি নিয়ে ‘তোমার স্মৃতি আমাকে কাঁদায় মা’ লিখেছিলাম। এটি ঢাকা পোস্টের অনন্য উদারতা। ঢাকা পোস্ট আমাদের পরিবারের মতোই আগলে রেখেছে।
ঢাকা পোস্ট শুধু একটি নিউজ পোর্টাল নয়, এটি একটি পরিবার। যে পরিবারের অভিভাবক আছে, ভাই-বোন অর্থাৎ সহকর্মী রয়েছে। আর এই পরিবারের সদস্য হতে পেরে আমি গর্বিত। আগামীতেও প্রিয় প্রতিষ্ঠান 'ঢাকা পোস্ট' পাঠকের আস্থা ও অকুন্ঠ ভালোবাসা নিয়ে এগিয়ে যাবে- সেই প্রত্যাশা করি।
লেখক : মোহাম্মদ মিলন, নিজস্ব প্রতিবেদক (খুলনা), ঢাকা পোস্ট