চাঁপাইয়ে কোয়ারেন্টাইনে ঠাঁই হবে আর মাত্র ২০ বাংলাদেশির
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম স্থলবন্দর চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ দিয়ে এ পর্যন্ত মোট ৮০ বাংলাদেশি ফেরত এসেছে। গত সপ্তাহের বুধবার (১৯ মে) থেকে গতকাল বুধবার (২৬ মে) পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন এই ৮০ জন।
এদিকে, জেলার কোয়ারেন্টাইন সেন্টারগুলো জায়গা ইতোমধ্যে ফুরিয়ে এসেছে। আর মাত্র ২০ জন হলেই নতুই কাউকে কোয়ারেন্টাইনে ঠাঁই দেয়ার সুযোগ থাকবে না। জেলায় মোট ১০০ জনের কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী।
তিনি জানান, ভারতফেরত সবাই ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন। জেলা পরিষদের শিবগঞ্জ উপজেলা ডাকবাংলো, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতাল, জেলা শহরের হোটেল আল নাহিদ ও আবাসিক হোটেল রোজে তাদেরকে রাখা হয়েছে।
তিনি আর জানান, আগে থেকেই জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ ১০০ জনের প্রস্তুতি নিয়ে জেলার এসব কোয়ারেন্টাইন সেন্টার প্রস্তুত করেছিল। বুধবার (২৬ মে) পর্যন্ত ইতোমধ্যে ৮০ জন চলে এসেছে। তাই ১০০ জন আসার পর বাকিদের জন্য রাজশাহীতে কোয়ারেন্টাইনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজশাহী জেলা প্রশাসনের সঙ্গে এ নিয়ে প্রস্তুতির বিষয়ে কথা চলছে। প্রাথমিকভাবে সেখানে ৫টি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার প্রস্তুত করা হয়েছে।
সরকারি সিদ্ধান্তে সীমান্ত দিয়ে আটকেপড়া বাংলাদেশি আসার যে অনুপাত, তাতে আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে জেলার প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন সেন্টারের জায়গা। এরপর জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ভারতে আটকেপড়াদের রাখতে হবে রাজশাহীতে।
কয়েকদিন আগে ভারত থেকে দেশে ফিরে জেলা শহরের হোটেল আল নাহিদে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি ঢাকা পোস্টকে জানান, এখনও সোনামসজিদ সীমান্তের ওপারে ভারতে প্রায় ২ হাজার বাংলাদেশি আটকা পড়েছে। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে নাগরিকদের নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বা এনওসি না দেয়ার কারণে তারা ফিরতে পারছে না।
এর আগে গত বুধবার (১৯ মে) হঠাৎ করেই সোনামসজিদ দিয়ে আসে ২৪ জন ভারতে আটকেপড়া বাংলাদেশি। দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবার (২০ মে) আসে আরও ১১ জন। তৃতীয় দিন ০২, চতুর্থ দিন ২৩, পঞ্চম দিন ৫, ষষ্ঠ দিন ৪ ও সপ্তম দিন ৩ জন ভারত ফেরত এসেছে। বুধবার (২৬ মে) এসেছে আরও ৮ বাংলাদেশি।
এ বিষয়ে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল ঢাকা পোস্টকে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আসা ভারত ফেরত বাংলাদেশিদের জন্য রাজশাহীতে ৫টি কোয়ারেন্টাইন সেন্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এসব কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে ৩০০ জনের ধারণক্ষমতা রয়েছে। এমনকি তাদের জন্য খাবার ও থাকার সুব্যবস্থা রাখা হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে তাদেরকে (ভারত ফেরত বাংলাদেশি) পাঠানো হলেই প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন রাখা শুরু হবে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে জানান, ভারত থেকে আসা ৮০ জনের মধ্যে দুইজনের পজিটিভ পাওয়া গেছে। তবে কারও দেহে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া যায়নি। কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের ১২ দিনের মাথায় আবার পরীক্ষা করার পর নেগেটিভ আসলে ১৪ দিন শেষে ছাড়পত্র পাবেন। কারো পজিটিভ এলে আইসোলেশনে পাঠানো হবে। কোয়ারেন্টাইন ও আইসোলেশনে থাকা কেউ যাতে সেখান থেকে পালিয়ে যেতে না পারে এজন্য পুলিশি প্রহরারও ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেনাপোল বন্দরের পাশাপাশি দর্শনা, হিলি ও সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে আটকেপড়া বাংলাদেশিরা ফেরত আসছেন।
মো. জাহাঙ্গীর আলম/এমএএস