রিমান্ড শেষে সাবেক রেলমন্ত্রী সুজন কারাগারে

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়া ইজিবাইক চালককে হত্যার পর মরদেহ গুমের মামলায় গ্রেপ্তার সাবেক রেলপথমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনকে তিন দিনের রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পঞ্চগড় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাহিদ হাসান তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে, গত ৩০ জানুয়ারি তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করে পুলিশ। আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পঞ্চগড় জজ আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ইয়াছিনুল হক দুলাল সাংবাদিকদের বলেন, আজকে যেহেতু আসামি পক্ষের কোনো আইনজীবী জামিনের আবেদন করেননি এজন্য আমরাও কোনো বিরোধিতা করিনি। পরে আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
আসামি পক্ষের আইনজীবী মির্জা সারোয়ার হোসেন বলেন, তিন দিনের রিমান্ড শেষে সাবেক রেলমন্ত্রী সুস্থ আছেন বলে আদালতকে জানিয়েছেন। আমরাও দেখেছি তিনি সুস্থ আছেন। কাল মঙ্গলবার আদালতে তার জামিন আবেদন করা হবে।
গত বছরের ১৬ সেপ্টেম্বর যাত্রাবাড়ী থানার একটি মামলায় শ্যামলীর বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতাল থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। পরে ১ ডিসেম্বর সকালে পঞ্চগড় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে হাজির করা হলে শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মো. আশরাফুজ্জামান তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, পঞ্চগড়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুম হন আল আমিন। এ ঘটনায় আল আমিনের বাবা মনু মিয়া গত ১০ নভেম্বর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক রেলমন্ত্রী সুজনসহ ১৯ জনকে আসামি করে হত্যা ও গুমের মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় আরও ১৫০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মামলার বাদী মো. মনুর ছেলে আলামিন পেশায় রিকশাচালক। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সক্রিয় যোদ্ধা ছিলেন তিনি। এ জন্য তাকে শুরু থেকেই বিভিন্ন হুমকি-ধামকি দেওয়া হতো। এরই ধারাবাহিকতায় গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর আল আমিন জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান সাকিব প্লাবন পাটোয়ারীর বাড়ির সামনে দিয়ে যখন বাড়ি ফিরছিলেন তখন কয়েকজন আসামির পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ মদদে অন্য আসামিরা তাদের হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র দ্বারা আল আমিনকে জখম করেন। এতে রক্তাক্ত হয়ে আলামিন সড়কে লুটিয়ে পড়লে তার নিথর দেহ নিয়ে যান তারা। তখন থেকেই আল আমিনের সন্ধান নেই।
এসকে দোয়েল/এএমকে