শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন উপাচার্য

শ্রেণিকক্ষ সংকট ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির কথা বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়লেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে গণমাধ্যমকর্মীদের মতবিনিময় সভায় এ আবেঘন পরিস্থিতি তৈরি হয়।
তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে বলেন, একটা শ্রেণিকক্ষ দিয়ে একটা ডিপার্টমেন্ট খোলা হয়েছিল। একজন শিক্ষক দিয়ে একটা ডিপার্টমেন্ট খোলা হয়েছিল। আমার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কষ্ট করে যাচ্ছেন। একসময় একাডেমিক ভবন-৩ কে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দুঃখ বলা হলেও আমি সেই দুঃখ ঘোচানোর চেষ্টা করছি।
তিনি আরও বলেন, ৩৪২ কোটি টাকার একটা প্রজেক্ট একনেকের প্ল্যানিং কমিটিতে পাশ হওয়ার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে একটা সেন্টার অব এক্সিলেন্স হিসেবে গড়ে তোলার মাস্টার প্ল্যানের মাধ্যমে ইউজিসিতে চার কোটি ৪২ লাখ টাকার আরেকটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের নান্দনিক সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। শীতকালীন পরিযায়ী পাখির অভয়ারণ্য গড়ে তোলাসহ এই বিশ্ববিদ্যালয়কে অত্র অঞ্চলের একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার চেষ্টা করছি।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, আপনারা জানেন আমি ৫ সেপ্টেম্বর থেকে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। তখন সারা দেশেই একটা অস্থির অবস্থা বিরাজমান ছিল এবং প্রথম চ্যালেঞ্জ ছিল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। আমি দায়িত্ব গ্রহণ করার পরপরই উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের মধ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বপ্রথম ক্লাস চালু করেছি এবং ১০ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষাও শুরু হয়েছিল। আমি যোগদানের পর অন্তর্বর্তী সময়ে যারা প্রশাসক ছিল সেই সh সহকর্মীদের নিয়ে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য, পড়াশোনা এবং নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নেওয়ার চেষ্টা করেছি। যেহেতু শিক্ষার্থীরা দীর্ঘ একটা সময় ট্রমার মধ্য দিয়ে গেছেন, তাই আমরা চেষ্টা করেছি বিভিন্ন কর্মশালা এবং ট্রেনিং আয়োজনের মাধ্যমে তাদের মানসিক স্বাস্থ্যকে ট্রমাটাইজড অবস্থা থেকে উত্তরণ করার জন্য।
আরও পড়ুন
তিনি আরও বলেন, শিক্ষার্থীরা যারা হ্যারেজমেন্টের শিকার হয়েছেন তাদের জন্য প্রক্টরিয়াল বডি কাজ করছে। গুরুতর আহত দুইজন শিক্ষার্থীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। পরিবহন সংকট নিরসনে বিআরটিসির বাস সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তা আগামী অর্থবছরে চার লেনের হবে বলে বিশ্বাস করি।
নোবিপ্রবি উপাচার্য বলেন, র্যাংকিংয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে আমরা র্যাংকিং সেল গঠন করেছি। বায়োলজিক্যাল গবেষণা এগিয়ে নিতে এনিমেল হাউজ গঠন করেছি। ইতিমধ্যে বিদেশের প্রায় ১২টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, যার আওতায় নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় একধাপ এগিয়ে যাবে।
এ সময় নোবিপ্রবি ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন সায়েন্সের (আইআইএস) পরিচালক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, দপ্তরসমূহের কর্মকর্তা ও সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
হাসিব আল আমিন/এমএন