লকডাউন ভেঙে যাতায়াত করতে পারছেন না কেউ
রাজশাহীর সঙ্গে করোনার নয়া হটস্পট চাঁপাইনবাবগঞ্জের সব ধরনের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৪ মে) মধ্যরাত থেকেই এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করেছে রাজশাহীর জেলা প্রশাসন। বিশেষ লকডাউন ভেঙে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে রাজশাহীতে আসা-যাওয়া করতে পারছে না কেউই।
মঙ্গলবার (২৫ মে) দুপুরের পর বিষয়টি পর্যবেক্ষণে দুই জেলার সীমান্ত এলাকা পরিদর্শনে যান রাজশাহীর জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল। এ সময় জেলার পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনও উপস্থিত ছিলেন। ছিলেন জেলা প্রশাসনের পদস্থ কর্মকর্তা, গোদাগাড়ীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রনিধি।
এলাকা ঘুরে এসে রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুহাম্মদ শরিফুল হক বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে লকডাউন অমান্য করে কেউ যেন রাজশাহীতে প্রবেশ করতে না পারে সেটি পর্যবেক্ষণে তারা সীমান্ত এলাকায় গিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহীতে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা প্রশাসন। সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি নিয়মিত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা হচ্ছে।
এ বিষয়ে রাজশাহীর পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, জেলায় করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সঙ্গে সংযুক্ত প্রধান প্রধান সড়ক-মহাসড়ক, এমনকি সব ফিডার সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জরুরি পণ্য বা সেবা ব্যতীত অন্য কোনো পরিবহন চলছে না।
তিনি আরো বলেন, পুলিশ জেলার সবগুলো প্রবেশ পথে চেকপোস্ট বসিয়ে কঠোর নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে। বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নিচ্ছেন। সীমান্তের পুলিশ ইউনিটগুলোতেও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বিভাগের আট জেলায় এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩৪ হাজার ৮২ জনের। এর মধ্যে ২৪ ঘণ্টায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ২২১ জনের।
নতুন করে ৮২ জনের করে করোনা ধরা পড়েছে করোনার নতুন হটস্পট চাঁপাইনবাবগঞ্জে। এছাড়া রাজশাহীতে ৫৪ জন, নওগাঁয় ২৪, সিরাজগঞ্জে ১৩, বগুড়ায় ১২, জয়পুরহাটে ১২, পাবনায় ৯ এবং নাটোরে ৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।
বিভাগের আট জেলায় এ পর্যন্ত করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫৩৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে করোনার হটস্পট চাঁপাইনবাবগঞ্জে মারা গেছেন একজন। একজন করে রাজশাহী ও নওগাঁয় প্রাণ হারিয়েছেন।
এ পর্যন্ত বিভাগে সব চেয়ে বেশি করোনায় প্রাণহানি ঘটেছে বগুড়ায় ৩০৯ জন। এছাড়া রাজশাহীতে ৮১ জন, নওগাঁয় ৩৮, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ২৮, সিরাজগঞ্জে ২৩, পাবনায় ২২, নাটোরে ২১ ও জয়পুরহাটে ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
বিভাগে এ পর্যন্ত করোনাজয় করেছেন ৩০ হাজার ৯৫১ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ১১৭ জন। করোনা নিয়ে এ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন ৩ হাজার ৭৯৫ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে করোনা নিয়ে ভর্তি হয়েছেন ১৩ জন।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএসআর