ইয়াসের প্রভাবে বরিশালে বাড়ছে নদীর পানি
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বরিশালে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ঝোড়ো হাওয়া, বজ্রসহ বৃষ্টি, ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।
আবহাওয়া অধিদফতরের সিনিয়র উচ্চমান পর্যবেক্ষক মাসুদ রানা রুবেল বলেন, পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ৪৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ, দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। সমুদ্র বন্দরকে ২ নম্বর সংকেত এবং নদী বন্দরকে ১ নম্বর নৌ হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ মে) বেলা ১১টায় বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৩১ দশমিক ৮ কিলোমিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৩ মিলিমিটার।
তিনি আরও বলেন, বুধবার (২৬ মে) চন্দ্রগ্রহণ। এ কারণে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাবে এবং বৃষ্টিপাত বাড়বে। গতিপথ ঠিক থাকলে বুধবার (২৬ মে) দুপুরের পর উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ইয়াস।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাসুম জানান, খরস্রোতা ও গুরুত্বপূর্ণ ১২টি নদীর মধ্যে বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার বিশখালী নদীর পানি বিপৎসীমার ৮৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। একই জেলার সদর উপজেলার বিশখালী পয়েন্টে বিপৎসীমা ২ দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার হলেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে ৩ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার উচ্চতায়।
মঙ্গলবার (২৫ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত প্রবাহিত পানির পরিসংখ্যান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড় যত নিকটবর্তী হবে নদীর পানি তত বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এ অবস্থায় নদীতীরবর্তী ও নদীতে অবস্থানকারীদের সরকারি নির্দেশনা অনুসরণের অনুরোধ করেন তিনি।
এ ছাড়া কীর্তনখোলা নদীর বিপৎসীমা ২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার হলেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। ভোলার খেয়াঘাট সংলগ্ন তেঁতুলিয়া নদীর বিপৎসীমা ২ দশমিক ৯০ সেন্টিমিটার হলেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১ দশমিক ৬০ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। দৌলতখান উপজেলা সংলগ্ন সুরমা ও মেঘনা নদীর বিপৎসীমা ৩ দশমিক ৪১ সেন্টিমিটার হলেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১ দশমিক ২০ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। উমেদপুর সংলগ্ন কঁচা নদীর বিপৎসীমা ২ দশমিক ৬৫ সেন্টিমিটার হলেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে ২ দশমিক ৩৭ সেন্টিমিটার উচ্চতায়।
পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীর বিপৎসীমা ২ দশমিক ৬৮ সেন্টিমিটার হলেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। কাচিপাড়া সংলগ্ন লোহালিয়া নদীর বিপৎসীমা ২ দশমিক ৫৫ সেন্টিমিটার হলেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে ১ দশমিক ৭ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। বেতাগী উপজেলার বিশখালী নদীর বিপৎসীমা ২ দশমিক ৬৬ সেন্টিমিটার হলেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে ২ দশমিক ১৩ সেন্টিমিটার উচ্চতায়।
মির্জাগঞ্জ উপজেলার বুড়িশ্বর/পায়রা নদীর বিপৎসীমা ২ দশমিক ৮১ সেন্টিমিটার হলেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে ২ দশমিক ৪৫ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। আমতলী উপজেলার বুড়িশ্বর/পায়রা নদীর বিপৎসীমা ২ দশমিক ৮৮ সেন্টিমিটার হলেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে ২ দশমিক ৭০ সেন্টিমিটার উচ্চতায়। ঝালকাঠির বিশখালী নদীর বিপৎসীমা ২ দশমিক ৮ সেন্টিমিটার হলেও পানি প্রবাহিত হচ্ছে দশমিক ৮৫ সেন্টিমিটার উচ্চতায়।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এসপি