বিএনপি-জামায়াতকে আল্লামা মামুনুল হকের হুঁশিয়ারি
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির আল্লামা মোহাম্মদ মামুনুল হক বলেছেন, দেশের প্রধান দুই দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীকে বলি—আপনারা যেভাবে নিজেদের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিদ্বন্দিতা ও সশস্ত্র সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছেন এর ফলে যদি ফ্যাসিবাদ আবার পুনর্বাসিত হয় তাহলে আপনাদেরকে বাংলার জনগণ ক্ষমা করবে না। বাংলাদেশকে রক্ষা করার জন্য, বিদেশি আধিপত্য রুখে দেওয়ার জন্য, ফ্যাসিবাদী অপশক্তিকে মোকাবিলা করার জন্য রাজপথে গড়ে ওঠা ঐক্য আরও দীর্ঘদিন সংগত সমন্বিত রাখতে হবে।
বিজ্ঞাপন
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে জেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার মাঠে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ আয়োজিত এক গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় তিনি দেশের ইতিহাস, বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যতের নানা বিষয়সহ ভারত ইস্যু, সংবিধান সংস্করণ, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণহত্যা এবং অর্থপাচার নিয়ে কথা বলেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইস্যু নিয়ে তিনি বলেন, অতীতের সব অর্জন বারবার ষড়যন্ত্রকারীরা ছিনতাই করেছে। বিজয়ের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ ব্যাহত হয়েছে। ২৪-এর বিপ্লবের সেনা নায়কদেরকে বলি—এবারের বিপ্লব ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। এ সময় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রদের বিগত দিনের মতো ভবিষ্যতেও সোচ্চার থাকার আহ্বান জানান।
বিজ্ঞাপন
ভারতকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা গত ১৫ বছর সম্পর্ক করেছেন আওয়ামী লীগ এবং শেখ হাসিনার সঙ্গে। শেখ হাসিনাকে সমর্থন করতে গিয়ে আপনারা বাংলার মানুষের ওপর সীমাহীন অন্যায় ও অত্যাচার করেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলার মানুষকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। মনে করেছিলেন আপনার ক্রীতদাসী শেখ হাসিনাকে দিয়ে অনন্তকালের জন্য বাংলাদেশকে লুটি পুটি খাবেন। কিন্তু সেই ক্রীতদাসীকেই বাংলার মানুষ তার মনিবের ঘরে পাঠিয়েছে। এ সময় ভারতকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, আগামীদিনে আপনারা বাংলাদেশর সঙ্গে নীতির পরিবর্তন করবেন এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ করবেন।
তিনি তার বক্তব্যে সংবিধানের নানা বিষয় তুলে ধরে বলেন, সংবিধানে ❝বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম❞ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। খবরদার এই বিসমিল্লার দিকে কেউ যেন রক্তচক্ষু নিয়ে তাকানোর চেষ্টা না করে। এ ছাড়া সংবিধানে আল্লাহর ওপর অবিচল আস্থা এবং বিশ্বাসের যে কথা ছিল সেটাকে আবার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অনেকেই বলেন, রাষ্ট্রের আবার ধর্মের দরকারটা কি? তাদের উদ্দেশ্য করে বলতে চাই, রাষ্ট্র কথা না বললে যদি ভাষার দরকার হয়, তাহলে রাষ্ট্র নামাজ না পড়লেও রাষ্ট্রের ধর্মের দরকার আছে।’
বিজ্ঞাপন
এ ছাড়া তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে প্রচারকৃত সব টাকা কীভাবে ফিরিয়ে আনবেন সে বিষয়ে বর্তমান সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুস সাহেব উদ্যোগ গ্রহণ করুন। সব টাকা ফিরিয়ে এনে দেশের জনগণের কল্যাণে ব্যয় করার উদ্যোগ নিন।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ পটুয়াখালীর সভাপতি মাওলানা আব্বাস আলীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদ, বাংলাদেশ খেলাফত যুব মজলিসের প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা মুহাম্মদ রাকীবুল ইসলাম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুল আহসান, জেলা হেফাজতে ইসলামের সভাপতি মাওলানা আবুল কাশেম, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু সাইদ, জেলা ইসলামি আন্দোলনের সভাপতি মাওলানা মুফতি হাবিবুর রহমান, জেলা ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আব্দুল কাদের, পটুয়াখালী ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ানসহ আরও অনেকে।
মো. রায়হান/এএমকে