ভোলায় কমেছে সব ধরনের সবজির দাম, ক্রেতাদের স্বস্তি
ভোলার কাঁচাবাজারগুলোতে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বেড়েছে, এতে অর্ধেকে নেমে এসেছে সব ধরনের শীতকালীন সবজির দাম, স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝে। কৃষকরা বলছেন, আগাম সবজি চাষের ফলে মৌসুমের শুরুতেই চড়া দাম পেয়েছেন, এখন বাজারে দাম কমলেও ক্ষতির আশঙ্কা নেই। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে সবজির সরবরাহ বেশি থাকার ফলে দাম কমেছে।
সরেজমিনে ভোলা জেলা শহরের কাঁচাবাজার, পরানগঞ্জ বাজারসহ সদর উপজেলার শান্তিরহাট বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি শীতকালীন সবজির দাম নেমে এসেছে অর্ধেকে। বেশিরভাগ সবজির দাম রয়েছে কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকার মধ্যে, আর সর্বোচ্চ ৫০ টাকা।
ভোলার বাজারগুলোতে প্রতি কেজি ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, বাধাঁকপি ২০ টাকা, সিম ২০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, দেশি সিম ২০ টাকা, বিচিওয়ালা সিম ৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ২৫ টাকা, শষা ২৫ টাকা, মিস্টি কুমড়া ২০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, করলা ৫০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, পেঁপে ৪০টাকা, কাচামরিচ ৫০ টাকা এবং নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৩০ টাকায়।
ভোলা সদর উপজেলার চরসামাইয়া ইউনিয়নের কৃষক মো. ফারুক ও শাহাবুদ্দিন বলেন, শীতকে লক্ষ করে আগাম সবজির চাষ করেছি। চলতি মৌসুমের শুরুতে ফসল বিক্রির উপযোগী হওয়াতে বিক্রি করেছি, ভালো দাম পেয়েছি। তা ছাড়া এ বছর শীত মৌসুমে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ হয়নি, যার কারণে ফসলের কোনো ক্ষতি হয়নি। ইতোমধ্যে মূলধন উঠেছে।
ভোলা কাঁচাবাজারে শীতকালীন সবজি কিনতে এসেছেন গৃহিণী আরজু বেগম। তিনি বলেন, গত দুই সপ্তাহ আগে বাজার থেকে যে ফুলকপি কিনেছি ৫০ টাকায় কেজি দরে, আজ সেই একই সবজি কিনেছি ২৫ টাকায়। দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে। ইচ্ছেমতো বাজার করতে পারছি।
আরেক ক্রেতা মো. মুত্তাদির হাসান ও আনোয়ার হোসেন বলেন, আমরা মধ্যবিত্ত। আগে পকেটের টাকা শেষ হলেও বাজারের ব্যাগ ভরতো না। আর এখন দুই সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারের ব্যাগ ভরলেও পকেটের টাকা শেষ হচ্ছে না মনে হয়। বর্তমানে সব শীতকালীন সবজি আমাদের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রয়েছে, যা স্বস্তির বিষয়। এতে আমরা খুশি।
বিক্রেতা মো. ইসমাইল বলেন, বাজারে শীতকালীন সবজির ব্যাপক সরবরাহ রয়েছে। সরবরাহের বিপরীতে চাহিদাও তুলনামূলক কমেছে। আড়তে যে পরিমাণ সবজি আসে ওই পরিমাণে ক্রেতা নাই। বর্তমানে সবজির সর্বোচ্চ কেজি দর ৫০ টাকা, আর সর্বনিম্ন ২০ টাকা। দাম অর্ধেকে নেমে এসেছে।
দাম কমার বিষয়ে বিক্রেতা মো. হুসাইন বলেন, এ বছর ভোলার সাত উপজেলাতেই ব্যাপক শীতকালীন সবজির আবাদ হয়েছে। আড়তে কমবেশি সব উপজেলা থেকেই সবজি আসছে। ভোলার বাইরের থেকে অতিরিক্ত দামে সবজি আমদানি করা লাগে না, এতে আমাদের পণ্য কেনার খরচও কমেছে। স্থানীয় সবজি স্থানীয় বাজারেই বিক্রি করছি। সব মিলিয়ে বললে, ক্রেতারাও স্বাচ্ছন্দ্যে তাদের পছন্দমতো শীতকালীন সবজি কিনতে পারছেন, আমরাও কম দামে বিক্রি করতে পারছি।
মো. খাইরুল ইসলাম/এএমকে