জাজিরা থানায় ওসির ঝুলন্ত মরদেহ, যা জানা গেল
গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর শরীয়তপুরের জাজিরা থানায় যোগদান করেছিলেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল-আমিন। বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) দুপুরে থানা ভবনের দ্বিতীয় তলায় ইন্সপেকশন বাংলোর (পদ্মা) রুমের মধ্যে তার ঝুলন্ত মরদেহ পায় পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বরিশাল জেলার মুলাদী থানার বাসিন্দা আল-আমিন জাজিরা থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিসেবে যোগদান করেন গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর। বৃহস্পতিবার দুপুরে জাজিরা থানার নতুন ভবনের দ্বিতীয় তলায় ইন্সপেকশন বাংলোর (পদ্মা) রুমের মধ্যে ওসি আল-আমিনের মরদেহ জানালার গ্রিলের সঙ্গে গামছায় ঝুলে থাকতে দেখা যায়। এ সময় তার পায়ের সঙ্গে লাগানো বসার চেয়ার দেখা যায়। সর্বশেষ ১১টা ১মিনিটে থানার সদস্য আজিজুল হক মোবাইল ফোনে অফিসের কাগজপত্র স্বাক্ষরের জন্য ফোন করলে ওসি আল-আমিন জানান যে তার একটু দেরি হবে। এরপর তিনি অফিসে না আসায় থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আব্দুস ছালাম থানার দ্বিতীয় তলার রুমে গেলে দেখতে পান, রুমের দরজা খোলা কিন্তু ভিড়ানো অবস্থায় রয়েছে। দরজা ধাক্কা দিয়ে রুমে ঢুকে উত্তর পাশে জানালার গ্রিলের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় ওসি আল-আমিনের মরদেহ দেখতে পান তিনি। পরে আব্দুস ছালাম থানার ডিউটি অফিসারসহ অন্যান্য অফিসার ফোর্সদের বিষয়টি জানান। তিনি পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন কর্মকর্তাকে অবগত করেন।
খবর পেয়ে পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন, অর্থ), ডিআইও-১ শরীয়তপুর, ডিবির ওসি (শরীয়তপুর) দ্রুত ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও জাজিরা হাসপাতালের কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে থানার দ্বিতীয় তলায় গিয়ে ওসি আল-আমিনের মরদেহ থাকার রুমে প্রবেশ করেন। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতকরণ ও ময়নাতদন্তসহ অন্যান্য আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আরও পড়ুন
তবে নিরাপত্তার স্বার্থে থানার ভেতরে গণমাধ্যম কর্মীসহ কাউকেই প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পরেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে উল্লেখ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রকৃত ঘটনা জানানো হবে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
শরীয়তপুর পুলিশ লাইন্স হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মনিরুল ইসলাম মনির বলেন, আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি তিনি আত্মহত্যা করেছেন। তার শরীরে অন্য কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। গলায় গামছা পেঁচানো ছিল। ময়নাতদন্তের পর বাকি বিষয় নিশ্চিত হওয়া যাবে।
এ বিষয়ে শরীয়তপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ শরিফুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওসি আল-আমিনের মরদেহ তার রুমের জানালার গ্রিলের সঙ্গে ঝুলতে দেখেন সহকর্মীরা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছান পুলিশ সুপারসহ অন্যরা। তার পরিবারের সদস্যরা আসার পর তাদের ও ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে মরদেহ নামানো হয়েছে। মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
সাইফ রুদাদ/আরএআর