সাভারের দুর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের ৪ জনের অপেক্ষায় গ্রামবাসী
ঢাকার সাভারে অ্যাম্বুলেন্স ও বাসের সংঘর্ষে নিহত চারজন একই পরিবারের সদস্য বলে জানা গেছে। ছেলের চিকিৎসা করাতে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকায় আসছিলেন তারা।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) দিবাগত রাতে ঢাকার সাভারে এ ঘটনা ঘটে। এ দুর্ঘটনায় অসুস্থ ছেলেসহ তার বাবা-মা ও খালা নিহত হয়েছেন। নিহতদের বাড়ি টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ভবন দত্ত গ্রামে।
নিহতরা হলেন, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার ভবন দত্ত গ্রামের বাসিন্দা ও ভবন দত্ত প্রাথমিক সরকারি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ফারুক হোসেন (৫০), তার স্ত্রী মহসিনা আক্তার (৩৫), তার শ্যালিকা সীমা আক্তার (৪০) ও অসুস্থ ছেলে মোহাইমিন ইসলাম ফুয়াদ (১৫)। সে ভবন দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক ফারুক হোসেনের ছেলে ফুয়াদ শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিল। তার শরীরে হিমোগ্লোবিনের অভাব থাকায় প্রতিমাসে ঢাকায় গিয়ে রক্ত দিতে হতো। ঘটনার দিন ঘাটাইল থেকে একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে পরিবার নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন। রাত ২টার দিকে সাভার এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি পৌঁছালে পেছন দিক থেকে একটি যাত্রীবাহী বাস ধাক্কা দেয়। এতে অ্যাম্বুলেন্সে থাকা গ্যাসের সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়। মুহূর্তেই গাড়িতে আগুন ধরে গেলে গাড়িতে থাকা চারজনই নিহত হন। এছাড়া আরও ৭ জন আহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন
ঘাটাইল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি আব্দুর রহমান তালুকদার বলেন, মরদেহগুলো এখনো ঢাকায় রয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হবে।
নিহত ফারুখ হোসেন সিদ্দিকীর ছোট ভাই মামুন সিদ্দিকী বলেন, আমরা তিন ভাই একবোন। বোন সবার বড়। ইতালি প্রবাসি। আমার বড় ভাই ফারুখের ছেলে ফুয়াদ অসুস্থ ছিল। তার শরীরে রক্ত কমে যায়। তবে থ্যালাসেমিয়া নয়। ঢাকায় ডাক্তার দেখানোর জন্য গত রাত ১১টার দিকে টাঙ্গাইলের গোপালপুর উপজেলা থেকে ছেলে ফুয়াদ ও ভাবিকে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্সে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। পথে দুর্ঘটনায় সব শেষ হয়ে গেল।
ফারুখ সিদ্দিকীর সহকর্মী মো. রুবেল মিঞা বলেন, প্রধান শিক্ষক খুব নীতিবান ছিলেন। একজন নীতিবান মানুষের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এমন শিক্ষক আর পাব না। আমাদের সবসময় আগলে রাখতেন।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বলেন, রাতে ফারুখ সিদ্দিকীকে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দিয়ে বাড়ি আসি। এক সঙ্গে চা পান করেছিলাম। ফারুখ সিদ্দিকীর মত ভালো মানুষ আর হয় না।
অভিজিৎ ঘোষ/আরকে