অপহৃত হননি সজীব, ফোন বন্ধ করে ছিলেন বন্ধুর বাড়িতে
যশোরে নিখোঁজ হওয়া যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সজীব হোসেনকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিখোঁজের প্রায় ১৭ ঘণ্টা পর যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাটির বাগডাঙ্গা এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
সজীব হোসেন ব্যক্তিগত কারণে তার এক বন্ধুর বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। গতকাল রাত ৯টার দিকে যশোর জেলা পুলিশ মিডিয়া সেল থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
সজীব হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যশোর জেলা শাখার যুগ্ম-আহবায়ক ছিলেন, পরবর্তীতে তিনি গত নভেম্বর মাসে পদত্যাগ করেন এবং বিপ্লব ২৪ নামে একটি সংগঠন গঠন করেন। এছাড়া তিনি যবিপ্রবি শাখা ছাত্রদলে যোদ দিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, যবিপ্রবির ছাত্র সজীব হোসেন গত মঙ্গলবার রাত আনুমানিক ১১টার দিকে নিখোঁজ হন বলে পুলিশের কাছে সংবাদ আসে। পরবর্তীতে বুধবার যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় নিখোঁজ জিডি করা হয়। এমন তথ্যের ভিত্তিতে ডিবি পুলিশ, কোতয়ালী মডেল থানা ও চৌগাছা থানা পুলিশ রাতব্যাপী জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে বিকেল ৫টার দিকে যশোর সদরের চুড়ামনকাটির বাগডাঙ্গা এলাকার একটি বাড়ি থেকে নিখোঁজ সজীব হোসেনকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সজীব হোসেন জানায়, ব্যক্তিগত কারণে তিনি তার বন্ধু চুড়ামনকাঠির নাজমুল হাসান রকির বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। তাকে উদ্ধার করে জেলা পুলিশের তত্ত্বাবধানে তার বোন মোছা. লাবনী খাতুন ও যবিপ্রবির প্রক্টর মোহাম্মদ আমজাদ হোসেনসহ অনান্য কর্মকর্তাদের জিম্মায় দেওয়া হয়।
এদিকে সজীব হোসেন নিখোঁজ হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাকে অপহরণ করা হয়েছে মর্মে হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট স্ক্রিনশটসহ একাধিক পোস্ট ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে চরম উৎকন্ঠা। সাধারণ মানুষের মাঝে ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি হয়।
আরও পড়ুন
সজীব হোসেন ব্যক্তিগত কারণে আত্মগোপনে থাকা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন গুজব রটানোর তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সচেতন নাগরিকেরা। তারা বলছেন, এ ধরনের নাটকীয়তা করে প্রশাসন ও সাধারণ মানুষের মাঝে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে কোনোভাবেই কাম্য নয়। তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানিয়েছেন।
এ ঘটনার বিষয়ে যশোরের সামাজিক সংগঠক আশরাফুজ্জামান বাবু ঢাকা পোস্টকে বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর সারা দেশের জনগণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তার কারণে আতঙ্কের মধ্যে আছে। তার মধ্যে নিজেরা (শিক্ষার্থীরা) আত্মগোপনে গিয়ে জনমনে ভয় এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে চাপে ফেলার এই অপতৎপরতাকে আমি সমাজের জন্য অশুভ বার্তা বলে মনে করছি। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এ্যান্টনি দাস অপু/এনএফ