সিলেটে যাচ্ছেন আজহারী, ১০ লাখ লোক সমাগমের সম্ভাবনা
সিলেট মহানগরীতে তাফসীরুল কুরআন মাহফিলে যোগ দিতে আসছেন জনপ্রিয় ইসলামি বক্তা ও গবেষক ড. মিজানুর রহমান আজহারী। এই মাহফিলকে ঘিরে ইতিমধ্যে সিলেটজুড়ে তার ভক্ত ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে। এই মাহফিলে কমপক্ষে ১০ লাখ মানুষের সমাগম হতে পারে বলে ধারণা আয়োজকদের।
আঞ্জুমানে খেদমতে কুরআনের উদ্যোগে আয়োজিত আগামী ৯, ১০ ও ১১ জানুয়ারি সিলেট এমসি কলেজ মাঠে ৩ দিনব্যাপী ৩৬তম তাফসীর মাহফিলের শেষদিনে প্রধান মুফাসসির হিসেবে আলোচনা পেশ করবেন গবেষক ড. মিজানুর রহমান আজহারী।
এদিকে তার মাহফিলকে ঘিরে ইতিমধ্যে সিলেটের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ মাঠে মঞ্চ ও প্যান্ডেল তৈরির কাজ শুরু করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। মাঠ প্রস্তুতিসহ নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য কাজ চলছে। পোস্টারিং, বিলবোর্ড ও মহানগরীর বড় বড় ডিজিটাল স্ক্রিন ও সাইনবোর্ড ছাড়াও অনলাইন, অফলাইনে ব্যাপক প্রচারণা চলছে আজহারীর মাহফিলকে কেন্দ্র করে।
কয়েক লাখ লোক সমাগমের কথা চিন্তা করে ইতিমধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ও মাহফিলের আয়োজক কমিটি দফায় দফায় বৈঠকে বসেছেন। জনভোগান্তি এড়াতে ও মাফফিলে আগতদের জন্য ব্যবস্থা ও নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছেন তারা।
মাহফিলের আয়োজক আঞ্জুমানে খেদমতে কুরআনের পৃষ্ঠপোষক শাহজাহান আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আঞ্জুমানে খেদমতে কুরআনের মাহফিল হবে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বড় মাহফিল। এই মাহফিল আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাইদির স্মৃতিবিজড়িত মাহফিল। আমরা ধারণা করছি, কম হলেও এখানে ১০ লাখ লোকের সমাগম হবে। এই বিপুল পরিমাণ মানুষের নিরাপত্তা ও তাদের সুব্যবস্থার জন্য আমাদের স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী কাজ করবে। আমরা শুধুমাত্র মাঠের জন্য ২৩০০ এর অধিক স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী রেখেছি। এছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করছেন। বিদ্যুৎ বিভাগ ও সংশ্লিষ্ট যারাই আছেন তাদের সহযোগিতা আমরা পাচ্ছি। মাঠের সব প্রস্তুতি ইতিমধ্যে শেষের দিকে আছে। আমরা সিলেটের ধর্মপ্রাণ মানুষকে আবারও এই মাহফিলে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।
সিলেট বিদ্যুৎ বিভাগ বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য কাজ করছি। এখানে ইতিমধ্যে আমরা ২৫০ কেভি ট্রান্সফরমার বসিয়েছি। এছাড়া সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগের ৫ সদস্যের একটি টিম কাজ করবে।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার সাইফুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, মিজানুর রহমান আজহারীর মাহফিলকে ঘিরে সিলেট মহানগর এলাকায় প্রচুর লোক সমাগম হবে। ধারণা করা হচ্ছে অন্তত ১০ লাখ লোক এই মাহফিলে আসবেন। তাদের সার্বিক নিরাপত্তার বিষয়ে সিলেট মহানগর পুলিশ কাজ করছে। সাদা পোশাকে আমাদের সদস্যরা কাজ করবেন। আমরা অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করব। ট্রাফিক বিভাগসহ আমাদের বিভিন্ন ইউনিট ইতিমধ্যে আয়োজক কমিটিসহ অন্যান্য বাহিনীর সঙ্গে এই বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। এখানে আগতরা যাতে নির্বিঘ্নে মাহফিল উপভোগ করতে পারেন সেই বিষয়টি আমাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ২ অক্টোরব দেশে ফেরেন তিনি। এক সপ্তাহ দেশে থেকে আবারও মালয়েশিয়ান যান। এরপর ২৬ ডিসেম্বর দেশে ফিরে মাহফিলে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পরদিন শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) কক্সবাজারের পেকুয়ায় বৃহত্তর সাবেক গুলদি তাফসিরুল কোরআন মাহফিলে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তাকে আবারও দেশের মাহফিলের মঞ্চে দেখা যায়।
মাসুদ আহমদ রনি/আরকে