ভাইদের ফাঁসাতে প্রতিবন্ধী মেয়েকে হত্যার অভিযোগ, স্ত্রীর মামলা
শেরপুর সদর উপজেলার সাদিয়া খাতুন (১৩) নামের এক বাক্প্রতিবন্ধী কিশোরীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে বাবা জমাদার মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মা মারুফা বেগম।
অভিযোগ রয়েছে, সদর উপজেলার কামারের চর ইউনিয়নের দশানীপাড়ার কোমর শেকের ছেলে জমাদার মিয়া তার সৎভাইদের ফাঁসানোর জন্য নিজের প্রতিবন্ধী মেয়েকে কুপিয়ে হত্যা করেছেন।
স্থানীয়রা জানান, কামারের চর ইউনিয়নের দশানীপাড়ার জমাদার মিয়া এলাকার চিহ্নিত জুয়াড়ি। পারিবারিক একখণ্ড জমি নিয়ে তার সৎভাই আব্দুল আজিজ ও আব্দুল হালিমের সঙ্গে বিরোধ চলে আসছে। এ নিয়ে একাধিকবার ঝগড়া ও মারামারির ঘটনাও ঘটে। এরই জের ধরে সৎভাইদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে নিজের মেয়েকে হত্যার ঘটনা ঘটায়। ঘটনার দিন ৬ জানুয়ারি সকালের নাস্তা খেয়ে মেয়ে সাদিয়া খাতুনকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী পয়স্তীরচর এলাকার সবজির মাঠে যায় জমাদার মিয়া। যাওয়ার পথে কামারের চর বাজারের হারুন মিয়ার হোটেলে সাদিয়াকে শিঙাড়া খাওয়ান জমাদার মিয়া। এর কিছুক্ষণ পরেই পয়েস্তিরচর সবজির জমি থেকে কিশোরীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার পর থেকে জমাদার মিয়া পলাতক রয়েছে।
এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। কামারের চর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান দুলাল মাস্টার বলেন, এটা জঘন্য অপরাধ। নিজের ভাইদের ফাঁসানোর জন্য এমন কাজ করেছে জমাদার। সে জুয়া খেলে সব শেষ করে এখন ভাইদের সম্পদ নিয়ে বিরোধ করে আসছে। ভাইদের ফাঁসানোর জন্য একটা প্রতিবন্ধী নিরীহ মেয়েকে খুন করেছে।
কামারের চর বাজারের হোটেল মালিক হারুন অর রশীদ বলেন, আমার হোটেলে মেয়েটিকে শিঙাড়া খাওয়ায় জমাদার মিয়া। এ সময় মেয়েটির হাতে একটা দা ছিল। এরপর তারা মাঠের দিকে চলে আসে। এর কিছুক্ষণ পরেই মেয়েটার মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়।
কৃষি শ্রমিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি দেখেছি প্রতিবন্ধী মেয়েটাকে নিয়ে এই বন্ধে (মাঠে) আসে জমাদার মিয়া। এ সময় মেয়েডার হাতে দা দেখছি। এরপরই মেয়েডার কুপিয়ে মাইরা ফেলে।’
এদিকে এ ঘটনায় সাদিয়ার মা মারুফা বেগম বাদী হয়ে জমাদার মিয়াকে প্রধান আসামি ও আরও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মঙ্গলবার রাতে শেরপুর সদর থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) জাহাঙ্গীর আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এ ঘটনায় জমাদার মিয়াসহ আরও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। মূল আসামিকে গ্রেপ্তারের জন্য চেষ্টা চলছে।
মো. নাইমুর রহমান তালুকদার/এমজেইউ