কিশোরীকে অপহরণ করে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ২
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে কিশোরীকে (১৭) অপহরণের পর সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল সোমবার (৬ জানুয়ারি) থানায় মামলা করেছে ওই কিশোরীর ভাই। দুইজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার মুস্তফা মিয়া (৫৭) ও কুমিল্লার জয়নাল মিয়া (৫৮)।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, গত ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ওই কিশোরীর মায়ের মোবাইলে অভিযুক্তরা কল দেন। মা নামাজে থাকায় কিশোরী কল রিসিভ করে। ওই সময় তারা জানায় তার মায়ের জন্য উপহার নিয়ে আসছে, সেটি যেন নিয়ে যায়। পরে ওই কিশোরী উপহার আনতে গেলে তাকে প্রাইভেট কারে তুলে সিলেটে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। সেখানে মুস্তফা, জয়নালসহ চার-পাঁচজন তাকে তিন দিন ধরে মারধর ও ধর্ষণ করেন। পরে একটি চক্রের কাছে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেন। চক্রটি নিয়ে যাওয়ার সময় ওই কিশোরী গাড়ি থেকে কৌশলে পালিয়ে একটি স্থানে আশ্রয় নেয়। খবর দিলে সেখান থেকে পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।
এদিকে মেয়েকে অপহরণের কথা শুনে ঘটনার একদিন পর ১ জানুয়ারি রাত ৯টার দিকে তার বাবা (৬২) হার্ট অ্যাটাকে মারা যান বলে জানা গেছে।
ওই কিশোরীর মামা বলেন, মেয়েকে অপহরণের কথা শুনে বাবা হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। এই পরিবারটি এমন দুটি ঘটনায় এলোমেলো হয়ে গেছে। অপহরণকারীরা পূর্বপরিচিত হওয়ায় মোবাইল ফোন উপহার দেওয়ার কথা বলে ডেকে নিয়ে ওই কিশোরীকে প্রাইভেট কারে তুলে নিয়ে যায়। পরে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। আমরা এর সঠিক বিচার চাই।
ওই কিশোরীর ভাই বলেন, আমরা কেন থানায় মামলা করলাম এজন্য গতকাল রাতেও আমাদেরকে হুমকি-ধমকি দেওয়া হয়েছে। আমার বোনকে বাড়ি থেকে তুলে কয়েকজন মিলে ধর্ষণ করে বিক্রি করতে চেয়েছিল। বোনের অপহরণের কথা শুনে বাবা হার্ট অ্যাটাকে মারা যান।
স্থানীয় পতনউষার ইউনিয়নের ইউপি সদস্য সিরাজুল ইসলাম বলেন, শুনেছি মেয়েটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না- এই খবর শুনে তার বাবা স্ট্রক করে মারা গেছেন। পরে মেয়েটি নিজেকে মুক্ত করে পরিবারকে জানালে তারা সিলেট থেকে গিয়ে উদ্ধার করে আনে। মেয়েটিকে সংঘবদ্ধভাবে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগের পর দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে মেয়েটি মৌলভীবাজার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
কমলগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ ইফতেখার হোসেন জানান, এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ছিল তিনজন, যা আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। তদন্তের স্বার্থে আমরা বিস্তারিত জানাচ্ছি না। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।
আরএআর