ফেলানী হত্যার বিচার চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে নিহত ফেলানী হত্যার ন্যায় বিচার দাবি করে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করেছে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন।
মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেন রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন কুড়িগ্রাম ও নাগেশ্বরী উপজেলা শাখার নেতাকর্মীরা।
সংগঠনের কুড়িগ্রাম জেলা শাখার প্রচার সমন্বয়ক মামুনুর রশীদ স্বাক্ষরিত স্মারকলিপিতে বলা হয়, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে শহীদ ফেলানীকে নির্মমভাবে হত্যা করে কাঁটা তারে ঝুলিয়ে রাখে ভারতীয় বিএসএফ। ১৩ আগস্ট এই হত্যা শুরু হয়, সেপ্টেম্বর অলৌকিকভাবে বিএসএফ সদস্যদের নির্দোষ ঘোষণা করা হয়। ফেলানীর বাবা-মা এই রায় প্রত্যাখ্যান করেন।
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০১৪ সালে ২২ সেপ্টেম্বর পুনর্বিচার নামক প্রহসন শুরু করে ভারত। প্রভাব খাটিয়ে পরের বছর দুই প্রধান আসামি আমীয় ঘোষসহ আসামিদের আবারও নির্দোষ ঘোষণা করে। নতজানু আওয়ামী সরকার এ রায় মেনে নেয়, কিন্তু এতে ভারতের কাছে পরাজিত হয় গোটা বাংলাদেশ।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলা শাখার প্রচার সমন্বয়ক মামুনুর রশিদ মামুন বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর ভারতের সঙ্গে চোখে চোখ রেখে যে সম্পর্কের কথা আমাদের বলা হচ্ছে ফেলানী হত্যার বিচার অমীমাংসিত রেখে সেটা কোনোভাবেই সম্ভব না। ভারতের সঙ্গে আওয়ামী সরকারের পদলেহনকারী অবস্থান থেকে উত্তরণের জন্য ফেলানী হত্যার সুবিচার নিশ্চিত করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। কারণ আমরা ফেলানী নামটা কোনো ব্যক্তির নাম মনে করি না, এটি বাংলাদেশের অস্তিত্বের নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কুড়িগ্রাম জেলা শাখার রাজনৈতিক সমন্বয়ক শাহ আব্দুল মোমেন বলেন, ভারতের সীমান্তের প্রচুর বাংলাদেশি নাগরিক গুলি করে হত্যা করা হয়। এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের সনদ অনুযায়ী বেআইনি। কেউ যদি অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে বা কোনো অন্যায় করে ভারতের আইন অনুযায়ী তার বিচার হওয়া উচিত। সেক্ষেত্রে নির্বিচারে গুলি করে মারা একবারেই অমানবিক। ফেলানী হত্যাকাণ্ড এরকমই একটি নির্মম হত্যাকাণ্ড। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।
সংগঠনটির জেলা সমন্বয়ক খন্দকার আরিফ বলেন, এর আগে ভারত ও আওয়ামী লীগ সরকার বিচারের নামে যে প্রহসন করেছে সেটা আমরাসহ গোটা বাংলাদেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে। আমাদের দাবি, এই গণ-অভ্যুত্থানের সরকার আন্তর্জাতিক দপ্তরগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে ফেলানী হত্যার বিচার করে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করবে।
স্মারকলিপিতে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন কুড়িগ্রাম জেলার পক্ষ থেকে ফেলানী হত্যার বিচার পুনরায় শুরু করে আসামিদের উপযুক্ত শাস্তি প্রদান করে দেশবাসীকে ন্যায় বিচার উপহার দেওয়ার জোর দাবি জানায়।
এএমকে