কুড়িগ্রামে চরাঞ্চলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকরা
কুড়িগ্রামে চরাঞ্চলে চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। প্রতি বছর বন্যা পরর্বতী সময় এ ফসল হয়ে ওঠে চরাঞ্চলের অবলম্বন।
সরিষার হলুদ ফুলে ভরে উঠেছে একরের পর একর জমি। কোথাও ক্ষেতের পরিচর্যা করছেন কৃষক। আবার কোথাও দল বেঁধে সবাই দেখতে আসছেন সরিষার ক্ষেত। বিস্তৃর্ণ চরাঞ্চল জুড়ে হলুদ ফুলের সমাহার। মৌমাছির আনাগোনায় ভরে উঠেছে সব ক্ষেত।
কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর অববাহকিার ৪০৫টি চর ও দ্বীপচরের বেশিরভাগ জমিতে সরিষা লাগিয়েছে কৃষকরা। বন্যার পর বোরো লাগানোর আগে কম খরচে এই অর্থকারী ফসল আবাদ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন তারা। তবে সরকারি প্রনোদনাসহ কৃষি বিভাগের সহযোগিতায় উন্নত বীজ ও প্রযুক্তিতে সরিষার আবাদ বৃদ্ধি করা গেলে আরও বেশি লাভবান হবেন বলে আশা চরাঞ্চলের কৃষকদের।
উলিপুর উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের কপিল উদ্দিন, আব্দুর রহমান সরকারিভাবে কৃষি সরিষা প্রদর্শনী প্লটে সরিষা চাষ করছেন। প্লটের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ্রী নকুল কুমার বলেন, সরকারিভাবে কৃষি সরিষা প্রদর্শনী প্লটে এবারে সরিষার ফলন অত্যন্ত ফলপ্রসু হয়েছে। এই কৃষকদের দেখে আশপাশের অন্যান্য কৃষকরাও সরিষা আবাদে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। সরিষা আবাদে খরচ কম এবং একই জমিতে রোরো চাষে খরচ কম লাগে। আমন ও ইরি-বোরোর মাঝের উৎপাদনকারী ফসল সরিষা। তাই কৃষক এটি চাষে বেশি ঝুঁকছেন।
উপজেলার হাতিয়া ইউনিয়নের অনন্তপুর গ্রামের কৃষক কপিল উদ্দিন, আব্দুর রহমানসহ অনেকে বলেন, আমরা এবার সরকারিভাবে সরিষার বীজ পেয়েছি। আবাদ ভালোই হবে মনে হয়। আশা করি আগামীতেও চাষ করব।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের পলাশ বাড়ি এলাকার কৃষক লাভলু মিয়া বলেন, এবার সরিষার ফলন মোটামুটি ভালো। তবে শীত ও কুয়াশার কারণে কোথাও ফলন ভালো আবার কোথাও খারাপ দেখা যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোশাররফ হোসেন বলেন, উলিপুর উপজেলায় এবার উচ্চ ফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষার আবাদ কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। এ সরিষা চাষে কম পরিশ্রমে বেশি লাভ হয়। সরিষা কৃষকের স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূূরণেও বিশেষ ভূমিকা রাখবে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলেও আশা করছি।
কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদেরকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, চলমান আবহাওয়ায় সরিষার আবাদ ভালো হচ্ছে। এবারে আলু ও ভুট্টার আবাদ বেশি হওয়ায় সরিষার আবাদ কমেছে। মাঠে সহকারী কৃষি কর্মকতারা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছে।
এবারে কুড়িগ্রামে চলতি মৌসুমে জেলায় ২৮ হাজার ৯শ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারিত করা হলেও আবাদ অর্জিত হয়েছে ২৫ হাজার ৬৩৫ হেক্টর জমিতে।
আরকে