গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতাল নারীকে মারধর, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে সাঁওতাল নারী ফিলোমিনা হাসদাকে মারধর এবং তার বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে গাইবান্ধা জেলা শহরে প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।
শহরের ডিবি রোডে গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (গানাসাস) সামনে আয়োজিত এই সমাবেশে সাঁওতাল, বাঙালি এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটি, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদ, এএলআরডি এবং জনউদ্যোগ গাইবান্ধা এই কর্মসূচির আয়োজন করে।
ভুক্তভোগী ফিলোমিনা হাসদার ছেলে ব্রিটিশ সরেন জানান, গত শুক্রবার সকালে তাদের পৈত্রিক জমিতে রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাটি ভরাট শুরু করলে বাধা দেওয়ার সময় তার খালাতো ভাইকে মারধর করা হয়। প্রতিবাদ করতে গেলে ফিলোমিনা হাসদাকে লাঞ্ছিত করা হয় এবং রাতে তাদের বাড়িতে হামলা ও আগুন দেওয়া হয়। বর্তমানে ফিলোমিনা হাসদা বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ডা. ফিলিমন বাস্কে। বক্তব্য দেন— পরিবেশ আন্দোলনের সভাপতি ওয়াজিউর রহমান রাফেল, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু, জনউদ্যোগ গাইবান্ধার সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্তী, আদিবাসী নেত্রী প্রিসিলা মুরমু, সামাজিক সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর কবীর, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রিকতু প্রসাদ, যুব নেতা সুজন প্রসাদসহ অনেকে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, রাজাহার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এবং তার সহযোগীরাই এ ঘটনার জন্য দায়ী। এজাহারে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং সাঁওতালদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান তারা।
আরও পড়ুন
বক্তারা আরও বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে সাঁওতালদের প্রায় ২৫০ বিঘা জমি স্থানীয় বাঙালিরা নানা উপায়ে দখলে নিয়েছেন। অনেক সাঁওতাল পরিবার জমি হারিয়ে অন্যত্র চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এর সুযোগ নিয়ে চেয়ারম্যান জমি দখলের চেষ্টা করছেন।
শনিবার রাতে চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা করা হয়েছে। বক্তারা বলেন, দ্রুত আইনের আওতায় এনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পাশাপাশি, ভুক্তভোগী সাঁওতাল পরিবারের সুরক্ষা ও তাদের জমি ফেরত দেওয়ার দাবি জানান তারা।
রিপন আকন্দ/এনএফ