একটু উষ্ণতা পেতে শীতবস্ত্রের আশায় রাত কাটে তাদের
রেলস্টেশনের প্ল্যার্টফর্মে একটি বস্তা, সেটার ওপর কাঁথা বিছিয়ে শুয়ে আছেন রহিমা বেগম। শীত নিবারণের জন্য শরীরে লাল রঙের একটি কাপড় মুড়িয়ে ঘুমিয়ে গেছেন তিনি। এসময় শীতবস্ত্র নিয়ে হাজির পুলিশ সুপার। শরীরে একটু উষ্ণতা পেতে একটি শীতবস্ত্র পাওয়ার আশায় উঠে পড়েন তিনি। কম্বল হাতে পেয়ে খুব খুশি হন।
রহিমা বেগমের মতো জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যার্টফর্মে ঘুমিয়ে রাত কাটানো অনেক শীতার্ত ছিন্নমূলদের এভাবেই শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন জয়পুরহাট জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব। রোববার (৫ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করেন।
এসময় জয়পুরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শাহেদ আল মামুন, জেলা গোয়েন্দা শাখা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান, সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মিজানুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শীতবস্ত্র পেয়ে নিজাম উদ্দিন নামের একজন বলেন, আমি ছিন্নমূল মানুষ। ভিক্ষা করে কোনো রকম চলি। রাতে স্টেশনের প্ল্যার্টফর্মে এসে শুয়ে পড়ি। শীতের রাতে একটি চাদর শরীরে দিয়ে শুয়ে পড়েছি। এই কম্বলটা পেয়ে খুব উপকার হলো। একটু হলেও শীত কম লাগবে।
আমেনা বিবি নামের আরেকজন বলেন, রাতে কুয়াশা বেশি হয়, আবার কম হয়। যখন হালকা বাতাস হয়, তখন ঠাণ্ডা লাগে। চাদর, শাড়ি বা অন্য কোনো কাপড় গায়ে দিয়েই ঘুমিয়ে পড়ি। এই কম্বল পাওয়ার পর এটি গায়ে দিয়ে একটু আরামে ঘুমিয়ে পরব।
ওসি শাহেদ আল মামুন বলেন, এই শীতের মৌসুমে জেলার পাঁচ থানায় ছিন্নমূল, গরিব ও অসহায় মানুষদের মাঝে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার কম্বল বিতরণের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এগুলো পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে। এরই ধারাবাহিকতায় এই রাতে জয়পুরহাট স্টেশন এলাকা ও শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় অবস্থান করা অসহায় মানুষদের মাঝে প্রায় সাড়ে তিনশ কম্বল বিতরণ করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আবদুল ওয়াহাব বলেন, আমরা মানবিক কারণে এ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে যাচ্ছি। সেজন্য এই শীতের রাতে অসহায়দের কম্বল দিয়ে সহযোগিতা করা হয়েছে। যাতে তারা শীতের সময় একটু উষ্ণতা পান।
চম্পক কুমার/আরকে