সিরাজগঞ্জে দুই কৃষক হত্যা : ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৮ জনের যাবজ্জীবন
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় কৃষক মকবুল হোসেন ও সাইফুল ইসলাম হত্যা মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও আটজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চারজনকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আটজনকে ২৫ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৫ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ-৩ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এই আদেশ প্রদান করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) অ্যাডভোকেট হামিদুল ইসলাম দুলাল ও আব্দুল লতিফ আকন্দ বলেন, আসামিদের উপস্থিতিতে আদালত এই রায় প্রদান করেন। রায় শেষে তাদের জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উল্লাপাড়া উপজেলার চকপাঙ্গাসী গ্রামের হাসানুর রহমান হাসু, মো. কাওসার আলী, মো. মোয়াজ্জেম হোসেন রিন্টু ও জাহিদুল ইসলাম জালিম।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- উল্লাপাড়া উপজেলার চকপাঙ্গাসী গ্রামের মো. মোতালেব, রেজাউল, সাদ্দাম, মনির হোসেন, আশরাফ আলী, বেল্লাল হোসেন, দুলাল হোসেন ও আব্দুল আওয়াল।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলার চকপাঙ্গাসী গ্রামের কৃষক সাইফুল ইসলামের সঙ্গে প্রতিবেশী আবুল কালামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। ২০১৭ সালের ২১ জানুয়ারি সকালে সাইফুল ইসলাম তার ভাই সোনা মিয়া, আবুল কালাম, মকবুল হোসেনসহ অন্যরা বাড়ির উঠানে বসেছিলেন। এ সময় হাসানুর রহমান হাসুর নেতৃত্বে আসামিরা লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্রসহ সাইফুল ইসলামের বাড়িতে এসে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় মকবুল হোসেন, আবুল কালাম, সাইফুল ইসলাম ও সোনা মিয়া গুরুতর আহত হন। এ সময় আসামিরা ও তাদের লোকজন বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে প্রায় দুই লাখ টাকা ক্ষতি করে। পরে আহতদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে মকবুল হোসেন, সোনা মিয়া ও সাইফুল ইসলামের অবস্থার অবনতি হলে তাদের বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে ঢাকায় নিয়ে ভর্তি করা হয়। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মকবুল হোসেন ও সাইফুল ইসলামের মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় উল্লাপাড়া উপজেলার চকপাঙ্গাসী গ্রামের নিজাম উদ্দিনের ছেলে শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে ৫১ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। মামলা চলাকালে ২১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে আজ মামলার চার আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৩৯ জন আসামিকে বেকসুর খালাস প্রদান করেছেন আদালত।
শুভ কুমার ঘোষ/এমজেইউ