মুন্সীগঞ্জে ঘন কুয়াশায় নষ্ট হচ্ছে ফুলকপি, ক্ষতির মুখে চাষিরা
মুন্সীগঞ্জে দুই দিন ধরে সূর্যের দেখা নেই। সারাদিন ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে সূর্য। পর্যাপ্ত রোদের অভাবে জমিতেই নষ্ট হচ্ছে ফুলকপি। যেই কপি আরও ১৫ দিন পরে পরিপক্ব হওয়ার কথা সেই কপি সূর্যের আলো না পেয়ে নষ্ট হয়ে ফুলে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে কৃষক আগেই অপরিপক্ব ফুলকপি কেটে বিক্রি করে ফেলছেন। এতে গত সপ্তাহের চেয়ে অর্ধেকের নিচে নেমেছে ফুলকপির দাম। গত ১০ দিন আগে যে কপি বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায় এখন তা বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়।
সরেজমিনে গিয়ে মুন্সীগঞ্জ সদর ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বেশ কিছু ফুলকপির খেত ঘুরে দেখা গেছে, ফুলকাপির মধ্যে কালো দাগ পরেছে। এ ছাড়া গাছের পাতায়ও কালো দাগ পড়েছে।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল, বজ্রযোগীনি, মহকালি, পঞ্চসার ইউনিয়ন টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আবদুল্লাহপুর, বেতকা, সোনারং টঙ্গিবাড়ী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ জমিজুড়ে এ বছর কপি চাষ হয়েছে। যে সমস্ত জমিতে এখন কপি চাষ করা হয়েছে এগুলোর অধিকাংশ জমিতে আরও একবার চাষ করা হয়েছিল। আগেরগুলো কেটে বিক্রি করে পুনরায় একই জমিতে কপি চাষ করেছেন চাষিরা। আগের কফিগুলোর ভালো দাম পেলেও বৃষ্টির কারণে সেই সময় কপি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এবার কুয়াশার কারণে ব্যাপকভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছেন চাষিরা।
চাষিরা জানান, বর্তমানে একেকটি ফুলকপি ১২ থেকে ১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ একেকটি কপি উৎপাদন করতে ব্যয় হচ্ছে ২০ থেকে ২২ টাকা।
সদর উপজেলার বজ্রযোগীনি পুকুরপাড় এলাকার চাষি আলামিন বলেন, একেকটি কপি চারা আমরা দুই টাকা করে কিনে জমিতে লাগিয়েছি। প্রথমবার লাগানোর পরে বৃষ্টিপাত হওয়ায় তা নষ্ট হয়ে গেছে। একই জমিতে পুনরায় লাগিয়েছিলাম কিন্তু ঘন কুয়াশায় সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। যে কপি ১৫ দিন পরে কাটার উপযুক্ত হবে এখনই তা কেটে ফেলতে হচ্ছে। কপির দাম কমে ৩ ভাগের এক ভাগে নেমেছে। একেকটি কপি ১২ থেকে ১৫ টাকা বিক্রি করছি অথচ একটি কপির পেছনে খরচ পরেছে ২৫ টাকা করে।
চাষি জাহাঙ্গির বলেন, এ জমিতে দ্বিতীয়বার কপি লাগিয়েছি। আগেরবার ভালো দাম পাওয়াতে লাভ হয়েছিল। এবার লোকসান গুনতে হবে।
ছোট দুই ছেলে নিয়ে জমি পরিচর্যা করছিলেন জসিম উদ্দিন। তিনি বলেন, কপি জমিতে পরিশ্রম বেশি। সারাদিন কাজ করতে হয়। উঁচু জমিগুলোতে কপি বিক্রি করে কিছুটা লাভ হয়েছিল । কিন্তু নিচু জমিগুলোতে সবেমাত্র কপি আসতে শুরু করেছে। এরমধ্যে আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় বড় ক্ষতি হইবো মনে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে কৃষি অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত ঢাকা পোস্টকে বলেন, কয়েক দিন যাবৎ ঘন কুয়াশার কারণে মূলত ফুলকপি নষ্ট হচ্ছে। আমরা কৃষকদের পরিমিত মাত্রায় ছাত্রাক নাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি।
কপির দাম কমের ব্যাপারে তিনি বলেন, উৎপাদন বেশি হলে দাম কমবে এটাই স্বাভাবিক। তিনি আরও বলেন, এ বছর মুন্সীগঞ্জ জেলায় ৪ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। ফলন মোটামুটি ভালো হয়েছে।
ব.ম শামীম/এএমকে