উপকূলে জেঁকে বসেছে শীত, গরম কাপড়ের দোকানে ভিড়
উপকূলীয় জেলা ভোলায় জেঁকে বসেছে শীত। শীতের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে হাড় কাঁপানো হিম বাতাস, রয়েছে ধোঁয়ার মতো কুয়াশা। এতে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন উপকূলীয় জেলার নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা। তাই একটু উষ্ণতার খোঁজে ভিড় করছেন পুরোনো গরম কাপড় বিক্রির দোকানগুলোতে।
বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর ভোলা জেলা শহরের নতুন বাজারের অস্থায়ী পুরোনো গরম কাপড় বিক্রির দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, দোকানে ক্রেতাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত গরিব মানুষ এসব দোকান থেকে স্বল্পমূল্যে পছন্দমতো শীতবস্ত্র কিনছেন তারা। প্রকারভেদে ব্লেজার বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকা থেকে শুরু করে ৭০০ টাকা পর্যন্ত। ছোট বাচ্চাদের জ্যাকেট বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিছ ২০০ থেকে ৩০০ টাকা, বড়দের জ্যাকেট ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা। ছোটদের সুয়েটার ১০০-১৫০ টাকা, বড়দের সুয়েটার ২০০-২৫০ টাকা। কম দামে গরম পোশাক কিনতে পেরে খুশি ক্রেতারা।
আরও পড়ুন
পৌর কাঁঠালি এলাকার নিরুতাজ বেগম এসেছেন তার ছেলের জন্য জ্যাকেট কিনতে। তিনি জানান, এখান থেকে ২৫০ টাকা দিয়ে একটি জ্যাকেট কিনেছি। বড় মার্কেট থেকে একই জ্যাকেট কিনতে গেলে ১০০০ হাজার টাকার বেশি লাগত।
বাপ্তা ইউনিয়নের মো. সুমন জানান, আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের জন্য এটাই বেস্ট। সাধ্যের মধ্যে পছন্দমতো কিনতে পেরেছি। বড় মার্কেটে গেলে অনেক টাকার দরকার, এতো টাকা নাই।
ব্লেজার (কোট) বিক্রেতা মো. খোকন জানান, একটি ব্লেজার বানাতে গেলে সর্বনিম্ন ৩ হাজার টাকার কাপড় লাগে আর মজুরি লাগে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকার দরকার হয়। কিন্তু ৫০০ টাকা হলেই আমার দোকান থেকে ক্রেতারা সুন্দর ব্লেজার কিনতে পারছেন। আমার কাছে সর্বোচ্চ ৮০০ টাকা দামের ব্লেজার আছে।
বিক্রেতা মো. এনায়েত ও মো. হামিদ জানান, গত দুই দিনের শীতে কেনা-বেচা বেড়েছে। এর আগে ব্যবসায় মন্দা ছিল। এখন আমাদের ব্যবসা চাঙ্গা। আমরা ঢাকা থেকে কম দামে পুরোনো কাপড় কিনে এনে কম দামেই বিক্রি করি। ক্রেতারাও খুশি আমরাও খুশি।
তবে উল্টো চিত্র ভোলা জেলা শহরের নামি-দামি মার্কেটগুলোতে। ব্যবসায়ীরা জানান, শীত অনুযায়ী বেচাকেনা নেই। শীত উপলক্ষ্যে দোকানে বিভিন্ন ব্রান্ডের অনেক টাকার জ্যাকেট, সুয়েটার, ব্লেজারসহ নানা শীত পোশাক উঠিয়েছি। কিন্তু কেনা-বেচা নাই বললেই চলে।
ভোলা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়া পর্যবেক্ষক মো. মনিরুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামলে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়। গত ২৪ ঘণ্টায় ভোলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ ১৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আগামী কয়েকদিন এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।
মো. খাইরুল ইসলাম/এমএন