তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে খুলনায় শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ৯
খুলনা নগরীতে তুচ্ছ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বিকেলে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে এ ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। আহত কয়েকজনকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ৯-১০ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায় সাদিয়া ও দিয়া নামে দুই শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় বেডে আছেন। এর মধ্যে একজনের অক্সিজেন চলছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক ও বিএল কলেজের শিক্ষার্থী সাজেদুল ইসলাম বাপ্পী বলেন, একটি অনুষ্ঠান শেষে নগরীর শিববাড়ি মোড়ে জিয়া হলের ভেতরে বালুর মাঠে আমরা কয়েকজন আড্ডা দিচ্ছিলাম। পরে সেখান থেকে দুইটি মোটরসাইকেলে করে আমরা ছয়জন ছেলে বেরিয়ে আসার সময় অজ্ঞাত কয়েকজন হঠাৎ হামলা করে। তারা আমার বাইকের পেছনে থাকা হাজী মহসীন কলেজের ছাত্র নাজমুলকে মারধর করতে থাকে। এরপর আমি প্রতিবাদ করতে গেলে আমাকেও মারতে ঔদ্ধত্য হয়। এ সময় আমাকে বাঁচাতে কয়েকজন ছাত্রী বোন এলে তাদের ওপরও হামলা করে। আহতদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। এর মধ্যে সরকারি পাইওনিয়ার কলেজের ছাত্রী দিয়া এবং সিটি কলেজের ছাত্রী সাদিয়া গুরুতর আহত। এ ছাড়া তাসনুবা ও রুমি কিছুটা আহত হয়েছে। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সহযোদ্ধা নাজমুল ও শাহারিয়ার ইসলাম খালিদসহ মোট ৮ জন আহত হয়েছে। শহরের এমন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতিতে আমরা গভীরভাবে আহত।
বিএল কলেজের শিক্ষার্থী রুমি রহমান বলেন, আমরা ওখানে নিজেদের মধ্যে একটি বিষয়ে আলোচনা করছিলাম। মেয়েরা একটু সাইডে ছিল। বাপ্পিসহ কেউ কেউ বাইকে আসছিল। এসময় কয়েকজন এসে হামলা চালায়। হামলা করলে আমরা ছেলেদের সেভ দেওয়ার চেষ্টা করি। তখন মেয়েদের ওপর নির্লজ্জভাবে হামলা চালায়। এতে সাদিয়া ও দিয়া গুরুতর আহত হন। আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলতে চাই যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে হামলাকারীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
সার্জারি ওয়ার্ডের কর্তব্যরত সহকারী রেজিস্ট্রার মো. কনক হোসেন বলেন, এখানে যারা আছেন তাদের অবস্থা ভালো আছে।
অপরদিকে সরকারি সিটি কলেজের ছাত্র সাকিব বলেন, মূলত সাজেদুল ইসলাম বাপ্পীর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সম্মুখ ছাত্রদের বাদ দিয়ে বিভিন্ন সময় সরকারি প্রতিষ্ঠানে অছাত্র নিয়ে যায়। এই নিয়ে তার সঙ্গে আজ সমাজসেবা অফিসে আমার একদফা তর্ক হয়। এরপর আমি শিববাড়ি মোড়ে অবস্থান করলে ওরা বেশ কয়েকজন এসে আবারও এই বিষয় নিয়ে তর্কে জড়ায়। বাপ্পীর সঙ্গে থাকা নাজমুল নামের একটি ছেলে আমার ওপর চড়াও হয়। আমিও প্রতিবাদ করলে সঙ্গে থাকা কয়েকটি মেয়ে আমার গায়ে হাত তুলে। তাদের নখের আঁচর আমার হাত ছিলে যায়। এ ছাড়া আমার হাতে ইট দিয়ে আঘাত করে।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে যেটা শুনেছি নিজেদের মধ্যে একটি অনুষ্ঠান শেষে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতি হয়েছে।
এদিকে হামলার অভিযোগ তুলে শিক্ষার্থীরা রাতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন। সেখানে তারা এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
মোহাম্মদ মিলন/এমজেইউ