শেরপুরে মাধ্যমিকে বই এসেছে চার শতাংশ, প্রাথমিকে ৫৩ শতাংশ
নতুন বছরের প্রথম দিনে শেরপুর প্রাথমিকে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা সব বই পেলেও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া সম্ভব হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৫ আগস্ট পতিত আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ছাপানো জটিলতায় মাধ্যমিকে এখন পর্যন্ত চাহিদার ৪ দশমিক ২ শতাংশ বই এসেছে। প্রাথমিকে বই এসেছে ৫৩ শতাংশ।
এছাড়া চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই এখনো আসেনি। নতুন শিক্ষাবর্ষে দেরিতে বই পাওয়া নিয়ে অভিভাবকরা শঙ্কা প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষ বলছে, যখন যে বই আসবে সেগুলো শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হবে।
জেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, শেরপুরে প্রাথমিক, মাধ্যমিক, মাদরাসা ও কারিগরিতে মোট শিক্ষার্থী ৩ লাখ ৪০ হাজার ২১৬ জন। ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে বইয়ের মোট চাহিদা ৩৩ লাখ ৮২ হাজার ৭৩৮টি। কিন্তু শেরপুরে প্রাথমিক ও মাধ্যমিককে এখন পর্যন্ত বই এসেছে ৫ লাখ ৭৩ হাজার। এছাড়া ১১৮টি মাদরাসার এবং কারিগরির কোনো বই আসেনি।
শেরপুর প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের তথ্য মতে, প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীর পাঁচ উপজেলার সব বই আসলেও ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির কোনো বই শেরপুর জেলায় আসেনি। এখন পর্যন্ত শেরপুর সদরে মাধ্যমিকে স্কুলে ১০ম শ্রেণির তিনটি বিষয় করে ২২ হাজার ৮০০টি বই ও স্কুলে ৭ম শ্রেণির ২৪ হাজার ৩০০টি বই এসেছে। এছাড়া শ্রীবরদী উপজেলায় মাধ্যমিকে ১০ম শ্রেণির তিনটি বিষয়ে (বাংলা, গণিত,ইরেজি) ৯ হাজার ৮০০শত ৫২ টি বই, নকলা উপজেলায় ৭ম শ্রেণির তিনটি বিষয়ে (বাংলা, গণিত, ইংরেজি) ১৮ হাজার ৫১৬টি বই, নালিতাবাড়ীতে ৭ম স্কুল ১৯ হাজার ৫০০ টি বই, ঝিনাইগাতীতে ৭ম স্কুল ১০ হাজার ২০০ টি বই এসেছে।
শেরপুর জেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৪৯৩টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৮১টি, মাদরাসা, ১০৩টি,কারিগরি প্রতিষ্ঠান রয়েছে ১৩টি।
রশিদ আহমেদ নামে এক অভিভাবক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ভাতিজী নতুন কারিকুলামে নবম শ্রেণিতে পরীক্ষা দিয়ে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে। এবার বছরের মাথায় আবার এটি বাদ হয়ে আগের কারিকুলাম শুরু হচ্ছে। নতুন বছরে নতুন কারিকুলামে পড়তে হবে। আগে যে কোর্স দুই বছর পড়ে শেষ করতো এটা এইবার একবছরে শেষ করতে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। তার ওপর আবার এ বছরের শুরুতেই বই পাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
আরেক অভিভাবক পারভেজ মোশাররফ বলেন, বারবার কারিকুলাম পরিবর্তনে সবচেয়ে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে আমাদের সন্তানদের। শিক্ষাবর্ষের সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যদি সিলেবাস প্রণয়ন করা হয় তাহলে আমাদের জন্য কিছুটা হলেও সুবিধা হবে। সংশ্লিষ্ট দপ্তর যদি বিষয়গুলো গুরুত্ব দেন আমরা উপকৃত হব।
এ প্রসঙ্গে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. রেজুয়ান ঢাকা পোস্টকে বলেন, এবার আনুষ্ঠানিকভাবে বই উৎসব হয়নি। আমরা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত খুব অল্প সংক্ষক বই পেয়েছিলাম। আজ অনেক বই এসেছে প্রতিটি উপজেলায় পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বইগুলো এলেই শিক্ষার্থীদের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে।
এদিকে মাধ্যমিকের মতো এবার প্রাথমিকেও এখনো শতভাগ বই আসেনি বলে জানিয়েছেন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ আহামেদ।
নাইমুর রহমান/আরকে