‘আওয়ামী লীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ফটকের ডিজিটাল সাইনবোর্ডের স্ক্রিনে ‘আওয়ামী লীগ আবার ভয়ংকর রূপে ফিরবে’ লেখা ভেসে উঠেছে। এতে স্থানীয়দের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়রা তদন্তপূর্বক দ্রুত ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
বুধবার (১ জানুয়ারি) সন্ধ্যার পর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ফটকের সাইনবোর্ডের স্ক্রিনে এই লেখা ভেসে উঠতে দেখেন স্থানীয়রা। এরপরই তোলপাড় শুরু হয়। খবর পেয়ে জীবননগর থানা পুলিশসহ জেলার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এ ঘটনায় জীবননগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনকে প্রধান করে তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিও গঠন করা হয়েছে। কমিটির বাকি দুই সদস্য হলেন- সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. ফিরোজুল ইসলাম ও আইসিটি অধিদপ্তরের জীবননগর উপজেলার সহকারী প্রোগামার অফিসার মাহমুদুর রহমান।
জীবননগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আল আমিন ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুই কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলার আহ্বায়ক আসলাম হোসেন বলেন, এটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়, এর পেছনে আওয়ামী দোসররা জড়িত থাকতে পারে। দীর্ঘ ১৭ বছর ফ্যাসিবাদী দল ক্ষমতায় থেকে সচিবালয় থেকে স্থানীয় ওয়ার্ড পর্যন্ত দলীয়করণ করছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ এগুলো করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। কিন্তু দেশের জনগণ সচেতন, কারও ফাঁদে পা দেবে না। পাশাপাশি এই ঘটনার সঠিক তদন্ত করে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।
অত্র বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২০১৬ সালে একটি কোম্পানি বিদ্যালয়ের মূল ফটকে সাইনবোর্ডটি লাগিয়ে দেয়। সেখানে স্ক্রিনে সবুজ রঙে শিক্ষামূলক বাণী লেখা উঠতো। কখনো কোনো সমস্যা হয়নি। আজ সন্ধার পর হঠাৎ করে লাল রঙ হয়ে এই উসকানিমূলক লেখা ভেসে ওঠে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে প্রশাসন ও উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, সাইনবোর্ডটিতে বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এক্সপার্টরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন। এ ছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে অ্যাপস দ্বারা পরিচালিত হয়। ধারণা করা হচ্ছে কেউ অ্যাপসের পাসওয়ার্ড হ্যাকড করে লেখাটি বসিয়ে দিয়েছে। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।
জীবননগর থানা পুলিশের পরিদর্শক মামুন হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশের একটি টিম গেছে। আমিও ঘটনাস্থলে যাচ্ছি।
আফজালুল হক/আরএআর