দিনভর দেখা গেল না সূর্য, কমলো দিনের তাপমাত্রাও
পৌষের মাঝামাঝি সময়ে পঞ্চগড়ে জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশা আর হিমেল বাতাসে নতুন করে শীত বৃদ্ধি পাওয়ায় বিপর্যস্ত পরিস্থিতিতে পড়েছে উত্তরের এ জেলা। ভোর থেকে দিনভর কুয়াশার আবরণে ঢাকা থাকায় দেখা যায়নি সূর্যের মুখ। উত্তরের হিমেল বাতাসে কনকনে শীত হাড় কাপাচ্ছে সীমান্ত জনপদের মানুষদের।
বুধবার (১ জানুয়ারি) বিকেল ৩টায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ১৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময়ে বাতাসের আদ্রতা ছিল শতকরা ৮৬ ভাগ।
এছাড়া এদিন সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয় ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০২৪ সালের পহেলা জানুয়ারিও তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, কয়েক দিন পর বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ আরও কমে যাবে। এতে নতুন বছরের শুরুতে তাপমাত্রা কমে শীত বাড়তে পারে। এছাড়া মাসের শুরু থেকে বিভিন্ন স্থানে শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে। সেইসঙ্গে কুয়াশাও বাড়তে পারে।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কুয়াশার আবরনের সঙ্গে বইছে হিমেল হাওয়া। উত্তর হিমালয় থেকে বয়ে আসা হিমশীতল বাতাস ও ঘন কুয়াশার কারণে হাড়কাঁপানো শীত অনুভূত হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন ছিন্নমূল, খেটে খাওয়া, দিনমজুর ও নিম্নআয়ের মানুষ।
পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে দূর্ভোগ পোহাচ্ছেন নিম্নবিত্ত, হতদরিদ্র ও অসহায় শ্রেণির মানুষ। শীতের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় শহরের ফুটপাতসহ হাটবাজারে বসা ফুটপাতের দোকানগুলোতে নিম্ন আয়ের মানুষদের ভিড় দেখা গেছে। তবে ফুটপাতের দোকানগুলোতে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে শীতের কাপড়। অনেকে টাকার অভাবে পরিবারের জন্য শীতের কাপড় কিনতে পারছেন না। অনেককে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারন করতে দেখা গেছে।
প্রতিবন্ধী জাহিরুল ইসলাম বলেন, আজকে প্রচণ্ড ঠান্ডা। আমরা তো অসহায় মানুষ, শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে আছি।
ভ্যান চালক আরশেদ আলী ও দেলোয়ার বলেন, ঘন কুয়াশার কারণে ভ্যান চালানো খুব কষ্টকর। যাত্রীরা সহজে ভ্যানে চড়তে চান না। আজ সারাদিন কুয়াশা ছিল। এভাবে থাকলে আয়-রোজগার কমে যাবে। এমনিতেই নিত্যপণ্যের যে দাম, তাতে যা ইনকাম করি তা দিয়ে চলে না।
পাথর শ্রমিক কামালসহ কয়েকজন বলেন, আজ আরও ঘন কুয়াশা। সারাদিন ধরে কুয়াশা আর ঠাণ্ডা বাতাসের কারণে কাজ করতে অসুবিধা হয়েছে। কিন্তু কি করবো, পরিবারের কথা চিন্তা করে পাথর তুলতে হচ্ছে। দিন শেষে জ্বর-সর্দির মতো রোগে ভুগতে হচ্ছে।
এদিকে শীতের কারণে বেড়েছে শীতজনিত বিভিন্ন রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্তের পরিমাণ। প্রতিদিনই জেলা ও উপজেলার হাসপাতালগুলোর বহির্বিভাগে জ্বর, সর্দি, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা।
জেলার প্রথম শ্রেণির তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ ঢাকা পোস্টকে বলেন, আজ দিনভর ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন ছিল। কমেছে দিনের তাপমাত্রাও। আজ বিকেল ৩টায় দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সকাল ৯টায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছিল ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এসকে দোয়েল/এমএসএ